ভারতের উত্তরাখণ্ড প্রদেশে একটি মসজিদ ও মাদরাসা গুড়িয়ে দেওয়ার পর ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৫০ জন। এদিকে সহিংসতার জেরে সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

এছাড়া স্কুল বন্ধ করার পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিষেবাও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি জমিতে ওই মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানিতে একটি ‘অবৈধ’ মাদরাসা এবং সংলগ্ন মসজিদ ভেঙে ফেলার পর ব্যাপক সহিংসতায় চারজন নিহত এবং আরও ২৫০ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ঘটা এই ঘটনায় শহরটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া দাঙ্গাকারীদের দেখা-মাত্র গুলি করার আদেশ জারি করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট পরিষেবাও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সহিংসতার কারণে সেখানকার স্কুলগুলোও বন্ধ রয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, আদালতের আদেশের পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দল বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানিতে একটি মাদরাসা এবং সংলগ্ন মসজিদ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ওই মাদরাসা ও মসজিদকে অবৈধ বলে গণ্য করার পর সেটি ভেঙে ফেলা হয়।

তবে মাদরাসা ও মসজিদ ভাঙার এই পদক্ষেপটি হলদওয়ানির ভানভুলপুরা এলাকায় জনতার তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। সংঘর্ষের ফলে ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়। এছাড়া প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা, পৌরসভার কর্মী এবং সাংবাদিকরাও সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন।

এনডিটিভি বলছে, বিক্ষুব্ধ জনতা কর্মকর্তাদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে এবং জবাবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে থানার বাইরে গাড়িতে আগুন দেওয়ায় সহিংসতা বেড়ে যায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।

জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার প্রহ্লাদ মীনা বলেছেন, আদালতের নির্দেশ মেনে ওই মাদরাসা ও মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বুলডোজার দিয়ে ধর্মীয় এই ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার সময় নারীসহ বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে ব্যারিকেড ভেঙ্গে এবং পুলিশের সাথে উত্তপ্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে থাকে। বিক্ষুব্ধ জনতা ২০টিরও বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং প্রাদেশিক আর্মড কনস্ট্যাবুলারির বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, আদালতের নির্দেশের পরে ওই মসজিদ ও মাদরাসা ধ্বংস করার জন্য দলটিকে সেখানে পাঠানো হয়েছিল। তার দাবি, এলাকার ‘অসামাজিক উপাদান’ পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে, যার ফলে বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে এবং মুখ্যমন্ত্রী জনগণকে শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন।

টিএম