অস্ট্রেলিয়ার একাধিক এলাকায় বন্যার সময় এক প্রজাতির পিঁপড়ার সারির একটি ছবি প্রকাশ্যে আসে। পানিতে মানুষের মতো ভেলা বানিয়ে একস্থান থেকে আরেক স্থানে যাচ্ছিল। এটি দেশটিতে ফায়ার অ্যান্ট সুপার কীট (অগ্নি পিঁপড়া) হিসেবে পরিচিত। এর কামড়ে মৃত্যু হতে পারে মানুষের।

ফায়ার অ্যান্ট পিঁপড়া যেখানে কামড় দেয় সেই জায়গা সাধারণত জ্বালাপোড়া করে থাকে। এদের হানায় স্থানীয় গাছপালা থেকে শুরু করে কৃষির ক্ষেত্রে ভয়ানক ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই পিঁপড়ার চোয়াল খুব শক্ত ও তীক্ষ্ণ হয়। কামড় দেওয়ার সময় ফরমিক অ্যাসিড নামে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে আসে। এ কারণে কামড় দেওয়া স্থানে তীব্র জ্বালা, ফোলাভাব ও চুলকানি হয়।

জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় ফায়ার অ্যান্টের ঘনত্ব দিন দিন বাড়ছে। একাধিক স্থানে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির ইনভেসিভ স্পিসিস কাউন্সিল (আইএসসি)। জারি করেছে বিশেষ সতর্কতাও।

ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমি এই পিঁপড়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এরা শুধু দ্রুত নদী পারাপার নয়, নতুন অঞ্চলগুলোতে চলে যেতে পারে। 

আইএসসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, ফায়ার অ্যান্ট প্রজাতির ১টি ৩ বছর বয়সী পিঁপড়া থেকে প্রায় ১ লাখ পিঁপড়ার জন্ম হতে পারে। ১টি প্রাপ্তবয়স্ক রানি পিঁপড়া প্রতিদিন দিতে পারে ৫ হাজার ডিম। পাখনা ওয়ালা ফায়ার অ্যান্টের দলনেতা রানি পিঁপড়েও উড়তে সক্ষম। এই রানি পিঁপড়ার কামড়ে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বাসস্থান ছেড়ে ডিম ও রানিকে রক্ষার জন্য তৈরি করে ভাসমান ভেলা। ভেলার নিচের দিকে থাকে কর্মী পিঁপড়েরা। ডিম ও রানিকে আগলে রাখে। এই ভেলার চারপাশে থাকে উড়ন্ত পিঁপড়ের দল। তাদের কাজ হচ্ছে শত্রুর আক্রমণ থেকে ভেলাকে রক্ষা করা। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, আমেরিকা, চীন, তাইওয়ান, জাপান ও ফিলিপাইনেও ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রজাতির পিঁপড়া।

এমএ