টেলিফোনে চীনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে আলাপচারিতা শুরু করে হংকংয়ে ৯০ বছর বয়সী এক নারীর কাছ থেকে কৌশলে ৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। হংকং পুলিশ বলছে, এটাই দেশটির সবচেয়ে বড় ফোন স্ক্যামের ঘটনা।   

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ইতোমধ্যে ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করেছে। হংকংয়ে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের প্রায়ই এ ধরনের ফোন স্ক্যামারদের পাল্লায় পড়তে হয়। 

পুলিশ বলছে, এ ক্ষেত্রেও প্রতারকরা ৯০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধাকে টার্গেট করেন। তারা শুরুতে টেলিফোনে এই বৃদ্ধার সাথে যোগাযোগ করে। চীনা জননিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারক বৃদ্ধাকে জানায়, তার নাম চীনের মূল ভূখণ্ডে গুরুতর অপরাধীর তালিকায় উঠেছে।    

স্থানীয় পুলিশকে উধ্বৃত করে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরপর ওই বৃদ্ধাকে বলা হয় তার অ্যাকাউন্টে যে অর্থ আছে সেটার নিরাপত্তা ও বিষয়টির তদন্তের জন্য ওই  অর্থ তদন্ত টিমের এক সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে হবে। 

পুলিশ বলছে, এর কিছুদিন পর শুধুমাত্র এই প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল ফোন ও একটি সিমকার্ড নিয়ে এক ব্যক্তি ওই বৃদ্ধার বাড়িতে হাজির হন। সেখানে তাকে মোটি ১১টি ব্যাংক ট্রান্সফার করতে হবে বলা হয়। 

পরের পাঁচ মাসে ওই বৃদ্ধা ৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার প্রতারকের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরে ট্রান্সফার করেন। পুলিশ বলছে, ওই বৃদ্ধার এক গৃহকর্মীর কিছু একটা সন্দেহ হলে তিনি বৃদ্ধার মেয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। তখন তার মেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। 

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য জামিনে ওই কিশোর মুক্তি পেয়েছে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে,  গ্রেফতার হওয়া এই কিশোরই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগের জন্য তাকে মোবাইল দিয়ে এসেছিলেন। 

হংকংয়ে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। ধনকুবেররা দেশটিতে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। প্রাসাদতুল্য বাড়িতে তারা বসবাস করেন। তবে দেশটিতে অনেক অঞ্চল অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। এসব অঞ্চলে অনেক পরিবার এমন অ্যাপার্টমেন্টে বাস করে যেগুলোর আকার গড়ে অনেকটা একটি কার পার্কিং স্পেসের মতো। 

সূত্র : এএফপি।