নিজের অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক যোদ্ধা (ফাইল ছবি)

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) বিদ্রোহীদের হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন দক্ষিণ আফ্রিকার সেনা সদস্য।

দেশটিতে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের হামলা ও সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর মধ্যেই পৃথক হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সহিংসতা বৃদ্ধির মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীদের হামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার দুই সেনাসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। গত বুধবার পৃথক এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আল জাজিরা বলছে, কঙ্গোর ইতুরি প্রদেশের জুগু জেলার কাছে একটি সোনার খনিতে কোডেকো সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়ে অন্তত ১২ জনকে হত্যা এবং আরও ১৬ জনকে অপহরণ করেছে বলে বৃহস্পতিবার দেশটির একটি সুশীল সমাজ সংস্থা জানিয়েছে।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা বৃহস্পতিবার বলেছে, তাদের দুই সৈন্য ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে মর্টার ফায়ারে নিহত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সেখানে সেনা মোতায়েন করার পর এটিই তাদের প্রথম প্রাণহানির ঘটনা।

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এসএএনডিএফ) জানিয়েছে, ‘এই হামলার ফলে এসএএনডিএফ-এর দুই সদস্য নিহত এবং আরও তিন সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য গোমার নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

গত বুধবার এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটে।

আল জাজিরা বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কঙ্গোর সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত অঞ্চলে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে এসব হামলার জন্য এম২৩ নামে এক বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দায়ী করে আসছে। এই গোষ্ঠীটি এই অঞ্চলে কয়েক বছর ধরে কঙ্গোলিজ সৈন্যদের সাথে লড়াই করছে।

মূলত কঙ্গোর এই অঞ্চলে ১২০ টিরও বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে এবং এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি তাদেরই একটি। কিনশাসা বলেছে, এম২৩ প্রতিবেশী রুয়ান্ডা থেকে সামরিক সহায়তা পাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই অভিযোগের সমর্থনে প্রমাণ রয়েছে। তবে রুয়ান্ডা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কিন্তু এম২৩ সাম্প্রতিক বিবৃতিতে ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা পূর্ব কঙ্গোতে আক্রমণের মধ্যে রয়েছে এবং এর ফলে গোষ্ঠীটি আবার গোমাকে লক্ষ্যবস্তু করছে। ১০ ​​বছর আগে তারা একবার গোমা দখল করেছিল।

এছাড়া দ্য কোঅপারেটিভ ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব কঙ্গো (কোডেকো) নামে এক পৃথক বিদ্রোহী গোষ্ঠীও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে লড়াই করছে।

মূলত, কঙ্গোতে যে কয়েকটি সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী রয়েছে, তার একটি হচ্ছে কোডেকো। কঙ্গোর খনিজ-সমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ড ও সম্পদের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে মিলিশিয়ারা। এই সংঘাতে গত এক দশকে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

এর আগে ব্যাপক মিলিশিয়া সহিংসতা রোধ করার লক্ষ্যে কঙ্গোর সরকার ২০২১ সালে নর্থ কিভু এবং ইতুরিতে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু হত্যাকাণ্ড ও বিদ্রোহী তৎপরতা কমার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।

টিএম