ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র (ফাইল ছবি)

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা নৌবাহিনীর উপস্থিতি ‘উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। তবে এই পরিস্থিতিও তার দেশকে নিজের সমুদ্রসীমা রক্ষা করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

মূলত দক্ষিণ চীন সাগর বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ জলপথ এবং গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চল নিয়ে চীন ও ফিলিপিাইনের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বুধবার বলেছেন- দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা নৌবাহিনীর উপস্থিতি ‘উদ্বেগজনক’। কিন্তু এরপরও এটি তার দেশকে নিজের সমুদ্রসীমা রক্ষা করা এবং জেলেদের রক্ষা করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরের উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্কারবোরো শোল এলাকায় ব্যুরো অব ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াটিক রিসোর্সেসের (বিএফএআর) একটি জাহাজের টহল মিশনের সময় চীনা নৌবাহিনীর জাহাজের উপস্থিতি পেয়েছে ফিলিপাইনের কোস্ট গার্ড (পিসিজি)।

পিসিজি বলেছে, বিএফএআর জাহাজটি চীনের উপকূলরক্ষী জাহাজের হাতে অবরুদ্ধ ছিল। যদিও বিএফএআর জাহাজটি এই অঞ্চলে ফিলিপিনো জেলেদের জ্বালানি বিতরণের কাজ করছিল।

অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার আগে বুধবার মার্কোস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাদের সকল জেলেকে, আমাদের জেলেদের যারা এই মাছ ধরার জায়গাগুলো থেকে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখব এবং...অবরোধ প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও আমরা তাদের সাহায্য করতে থাকব।’

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চীন সাগরে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে যুগ যুগ ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। তবে ২০২২ সালে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেই দ্বন্দ্ব বহুলাংশে বেড়ে যায়।

চীনের দাবি, দক্ষিণ চীন সাগরের ৯০ শতাংশই তাদের অংশ। তবে ২০১৬ সালে একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল তাদের রায়ে জানায়, চীনের এ দাবির কোনও ভিত্তি নেই। তবে চীন এ রায় মানেনি। এর পরিবর্তে তারা দক্ষিণ চীন সাগরে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে।

এছাড়া বিরোধপূর্ণ এই অঞ্চল নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেও উত্তেজনা রয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুমকি দেন, চীন যদি ফিলিপাইনের ওপর কোনও আক্রমণ করে তাহলে দেশটিকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে।

মূলত ১৯৫১ সালে স্বাক্ষরিত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইন যেকোনও সশস্ত্র আক্রমণের ক্ষেত্রে একে অপরকে রক্ষা করতে কাজ করবে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ২০২২ সালের জুনে ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ফিলিপাইনের জোট পুনরুজ্জীবিত করেন।

আর এরপর থেকেই দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের নানা কর্মকাণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ফিলিপিনো কর্তৃপক্ষ।

টিএম