মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা ও কামানের গোলার আঘাতে অন্তত ৪০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন। গত মাসে রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী পা-ও ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (পিএনএলএ) সাথে সংঘর্ষের মাঝে জান্তার হামলায় ওই বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি ঘটেছে। মঙ্গলবার থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, পা-ও ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের (পিওয়াইও) তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ জানুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শান রাজ্যের হিসেং, লোইলেন এবং হপং শহরে হামলা চালিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে মিয়ানমার জান্তা। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় এই রাজ্যের স্বায়ত্তশাসিত পা-ও অঞ্চলে জান্তা সৈন্য ও তাদের সহযোগী পা-ও ন্যাশনাল আর্মির (পিএনএ) বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে পিএনএলএ।

দ্য ইরাবতি বলেছে, ২০১৫ সালে মিয়ানমারের জাতীয় অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পিএনএর যোদ্ধাদের সাথে গত ২০ জানুয়ারি পা-ও অঞ্চলের স্যাম এইচপু গ্রামে জান্তা সৈন্যদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সময় জান্তা বাহিনী ও পিএনএ সৈন্যরা পিএনএলএর যোদ্ধাদের বহরকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

পরে ২৪ জানুয়ারি জান্তা-নিয়ন্ত্রিত হিসেংয়ে হামলা চালিয়ে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও প্রশাসনিক বিভাগসহ শহরের বেশিরভাগ এলাকার দখল নেয় পিএনএলএর যোদ্ধারা। পা-ও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলজুড়ে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপক বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে জান্তা বাহিনী। পুরো এলাকায় এখনও পিএনএলএর যোদ্ধাদের সাথে জান্তা সৈন্য ও তাদের মিত্রদের সংঘর্ষ চলছে।

পিওয়াইও বলেছে, স্বায়ত্তশাসিত পা-ও অঞ্চলে জান্তা বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৯৩ বার বিমান হামলা চালানোর পাশাপাশি ৮০৮টি কামানের গোলা ছুড়েছে। জান্তা সৈন্যদের নির্বিচার হামলায় ওই এলাকায় অন্তত ৪০ বেসামরিক নিহত ও ৫১ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামরায় পা-ও অঞ্চলে ৯৭টি ভবন ধ্বংস হয়েছে।

দ্য ইরাবতিকে পিওয়াইওর মুখপাত্র মা লি লি বলেছেন, নিহতদের মধ্যে দুই কিশোর ও তিন কন্যা শিশু রয়েছে। এ ছাড়া পাঁচজনের মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। জান্তার হামলায় সেখানে ৯৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অন্তত এক ডজন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: দ্য ইরাবতি।

এসএস