চাঁদ ও মঙ্গল অভিযানের বিষয়ক প্রশিক্ষণ শেষ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা দল ন্যাশনাল অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) বিশেষ দল ‘ফ্লাইস’। দুই বছর ধরে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে নাসার অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠান জনসন স্পেস সেন্টার।

২০২১ সালে চাঁদ ও মঙ্গল অভিযানের জন্য নভোযাত্রী চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল নাসা। সেই বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া দিয়ে আবেদন করেছিলেন ১২ হাজারেরও বেশি মার্কিন নাগরিক। তাদের মধ্যে মাত্র ১২ জন নাসার চুড়ান্ত বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সুযোগ পেয়েছেন এই দলে ঢোকার।

এই ১২ জনের মধ্যে রয়েছেন যুদ্ধবিমানের পাইলট, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, এবং ডাক্তার। সামরিক-বেসামরিক উভয় ক্ষেত্র থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের।

নিয়োগের পর গত দুই বছরে এই দলের সদস্যদের স্পেস ওয়াকিং, রোবোটিক্স, স্পেস স্টেশন সিস্টেমসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে নাসা। এই গ্রুপটির সঙ্গে আমিরাতের দুইজন নাগরিকও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

সম্প্রতি তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। সেই উপলক্ষ্যে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টোন শহরের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল নাসার পক্ষ থেকে। সেই অনুষ্ঠানেই এই দলটির নাম ‘ফ্লাইস’ ঘোষণা করা হয়।

নাসার সহকারী প্রশাসক জিম ফ্রি এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে ‘ফ্লাইস’ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের এখানে থাকার অর্থ হলো— আপনারা প্রত্যেকেই খুব বিশেষ এবং ব্যতিক্রমী মানুষ। মহাবিশ্বের অজানাকে জানার যে বিপজ্জনক অভিযান, তাতে আপনারা নেতৃত্ব দেবেন। আপনাদের অর্জন মানব সভ্যতার অগ্রসর হওয়ার পাথেয় যোগাবে।’

নাসা সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে এই দলের সদস্যদের মহাকাশে মার্কিন স্পেস স্টেশনে পাঠানো হবে। সেখানে পৌঁছানোর পর চাঁদ ও মঙ্গল অভিযানের অভিযাত্রীদের পৃথক করা হবে।

২ বছরের নিবিড় প্রশিক্ষণকালে ফ্লাইস সদস্যদের পরস্পরের মধ্যে ব্যাপক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দলের অন্যতম সদস্য এবং বায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডক্টোরেট ডিগ্রিধারী ক্রিস্টিনা বির্চ এএফপিকে বলেন, ‘গত বছর অ্যালবামায় আমাদের সারভাইভাল ট্রেনিং ছিল। এক পর্যায়ে আমাদের সবার খাবার শেষ হয়ে গিয়েছিল। সে সময় একজনের ব্যাগে কয়েকটি পিনাট বাটারের কৌটা ছিল। সেগুলো আমরা সবাই ভাগ করে খেয়েছি।’

‘গত দুই বছরে আমরা আসলে একটি পরিবার হয়ে উঠেছি। আমরা ১২ জন এখন একটি পরিবারের সদস্য।’

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ