সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্যটন ভিসায় গিয়ে ভিক্ষা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে ভিক্ষার জন্য অনেকে আমিরাতে আসেন।

এসব ‘ভুয়া’ ভিক্ষুকরা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যেন সহানুভূতি আদায় করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

দুটি আলাদা ঘটনায় দুবাই পুলিশ ইতোমধ্যে দুই নারীকে ৬০ হাজার ও ৩০ হাজার দিরহামসহ আটক করেছে যারা পর্যটন ভিসায় সেখানে গিয়েছেন।

ওই নারীদের মধ্যে একজন সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তার শিশু সন্তানকে ব্যবহার করছিলেন। এভাবে হাজার হাজার দিরহাম ভিক্ষা করেছেন তারা। অথচ দুই নারীই আমিরাতে যান পর্যটন ভিসায়।

দুবাই পুলিশ জানিয়েছে, তারা যেসব ভিক্ষুককে গ্রেপ্তার করেছে তার মধ্যে ৯৯ শতাংশই ভিক্ষাকে নিজেদের পেশা হিসেবে দেখেন।

পবিত্র রমজান মাস শুরু হলে ভিক্ষুকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই বাস্তবে ভিক্ষুক নন। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ উপার্জনের জন্য তারা ভিক্ষুক সাজেন।

‘বেতনভুক্ত ভিক্ষুক’

আমিরাতের শারজাহর পুলিশ সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসকে বেতনভুক্ত ভিক্ষুকদের সম্পর্কে অবহিত করেছে। তারা জানিয়েছে, একটি চক্র বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষকে ভিক্ষার জন্য নিয়ে আসে এবং এজন্য প্রতি মাসে বেতন দিয়ে থাকে।

গত চার বছরে ১ হাজার ৭০১ ভিক্ষুককে গ্রেপ্তার করেছে দুবাই পুলিশ। যার মধ্যে ২০২৩ সালেই এই সংখ্যা ছিল পাঁচশরও অধিক। যার অর্থ, পর্যটন ভিসায় দুবাই গিয়ে ভিক্ষা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত বছর পুলিশ দুই ভাই, তাদের স্ত্রী এবং এক শিশুকে আটক করেছিল। ওই পুরো পুরিবারটি পর্যটন ভিসা নিয়ে দুবাই গিয়ে একটি মসজিদের সামনে ভিক্ষা করছিলেন।

আলাদা এক ঘটনায় দুবাই পুলিশ এক ব্যক্তির কৃত্রিম অঙ্গের ভেতর তিন লাখ দিরহাম পেয়েছিল। যার পুরোটাই তিনি ভিক্ষা করে জমিয়েছিলেন। এছাড়া এক নারীকে দেখা গিয়েছিল তিনি মসজিদের সামনে ভিক্ষা করছেন। কয়েক হাজার দিরহাম ভিক্ষা পাওয়ার পর তিনি দামি গাড়িতে করে সেই স্থান ত্যাগ করেন।

আরব আমিরাতে ভিক্ষা করা একটি অপরাধ। যদি কেউ ভিক্ষার সময় ধরা পড়েন তাহলে তাকে ৫ হাজার দিরহাম ও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। আর যেসব চক্র এসব কাজ করে তাদের এক লাখ দিরহাম জরিমানা করার আইন রয়েছে।

যদি কোনো ভিক্ষুককে সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে তার সম্পর্কে অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে আমিরাত পুলিশ।

সূত্র: খালিজ টাইমস

এমটিআই