মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে দেশটির স্থানীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির শিকার হয়েছেন জান্তা সৈন্যরা। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে জান্তাবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো (ইএও) হামলা বৃদ্ধি করায় গত চারদিনে মিয়ানমার জান্তা একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ বেশ কয়েকজন সৈন্য এবং কৌশলগত ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

সোমবার থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন, কাচিন, স্যাগাইং ও মান্দালয় অঞ্চলে এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে। পিডিএফ এবং ইএও’র হামলায় জান্তার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করেছে ইরাবতি। তবে সামরিক বাহিনীর হতাহতের তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির এই সংবাদমাধ্যম।

রাখাইনের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) বলেছে, শুক্রবার রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরে জান্তা বাহিনীর নবম সেন্ট্রাল মিলিটারি ট্রেনিং স্কুল থেকে পালিয়ে আসা সৈন্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে এএ যোদ্ধারা। হামলায় জান্তার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইয়ে তুত উইন এবং অন্যান্য কয়েকজন সৈন্য নিহত হয়েছেন।

১০ দিনের তীব্র লড়াইয়ের পর আরাকান আর্মির সদস্যরা গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে স্কুলটির দখল নেয়। আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের হামলার মুখে শহরটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন জান্তা সৈন্যরা। পরে ওই শহরে নিহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও তার বাহিনীর হাতে জিম্মি হওয়া ২০ জন গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে এএ যোদ্ধারা।

শনিবার রাখাইনের রাথেডং ও রামরি শহরে আকাশ, সমুদ্র এবং স্থলপথে জান্তা বাহিনী বোমা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে এএ। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, জাতিগত সশস্ত্রগোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) ও মিত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো ১৩ দিনের টানা হামলার পর শনিবার কাচিন রাজ্যের হপাকান্ত শহরের একটি সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে। হপাকান্তের তর মা খান গ্রামের কাছে কৌশলগত পাহাড়ের চূড়ায় এই ঘাঁটিটির অবস্থান।

ঘাঁটি রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পর জান্তা সৈন্যরা ওই এলাকায় ব্যাপক কামানের গোলা নিক্ষেপ ও বিমান হামলা চালিয়েছে। পরে শনিবার কেআইএর কর্মকর্তাদের সাথে সমঝোতার পর জান্তা সৈন্যরা অস্ত্র রেখে ঘাঁটি ছেড়ে চলে যান বলে কেআইএর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র দ্য ইরাবতিকে জানিয়েছে।

গত সপ্তাহ থেকে কাচিন রাজ্যজুড়ে জান্তার সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা বৃদ্ধি করেছে কেআইএ। ওই রাজ্যে এখন পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখলে নিয়েছে কেআইএ যোদ্ধারা।

সূত্র: দ্য ইরাবতি।

এসএস