ফিলিপাইনের একটি কথিত ‘প্রেম কেন্দ্র’ থেকে কয়েকশ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব নারী-পুরুষদের দিয়ে প্রতারণা করাচ্ছিল একটি চক্র। তাদের প্রেমিক ও প্রেমিকা বানিয়ে অনলাইনে অন্যদের সঙ্গে প্রতারণা করানো হতো।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এই কেন্দ্রে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় ফিলিপাইনের ৩৮৩ জন, চীনের ২০২ জন এবং অন্যান্য দেশের ৭৩ জন নাগরিককে উদ্ধার করা হয়।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি প্রতারণার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দেশটি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যে, অনেক সময় প্রতারকরাই প্রতারণার শিকান হন এবং অনেকটা বাধ্য হয়ে প্রতারণা করেন।

তরুণ এবং প্রযুক্তি সম্পর্কে জানাশোনা ব্যক্তিদের লোভ দেখিয়ে এসব প্রতারণায় যুক্ত করা হয়। যারমধ্যে রয়েছে অর্থপাচার, ক্রিপ্টো ও কথিত প্রেম প্রতারণা।

প্রতারকরা সাধারণত ভুয়া পরিচয়ের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে টার্গেট করে। এরপর ওই নারী বা পুরুষের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলে। নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বিভিন্ন ছবি পাঠায়। সবশেষে ভুয়া প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করানোর মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

বৃহস্পতিবারের অভিযানটি চালানো হয়েছে ভিয়েতনামের এক নাগরিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। তাকে ওই কেন্দ্রটিতে আটকে রেখে প্রতারণা করতে বাধ্য করা হতো। এছাড়া সেখানে তাকে নির্যাতন করা হতো। সেখান থেকে তিনি পালিয়ে আসেন এবং একটি খামারির কাছে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে ওই খামারি তাকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান। এরপর তার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এত মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।

৩০ বছর বয়সী ভিয়েতনামের এই নাগরিক গত জানুয়ারিতে ফিলিপাইনে আসেন। তাকে রাঁধুনির চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে রাজধানী ম্যানিলা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের ওই স্থানে তাকে আটকে ফেলা হয়। এরপর তিনি বুঝতে পারেন আসলে মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছেন তিনি।

তার মতো অনেকেই পালানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি বাদে সবাই ধরা পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিয়েতনামের এই যুবক গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেওয়াল টপকে ও নদী পেরিয়ে নিরাপদস্থানে চলে যেতে সমর্থ হন।

মূলত সুদর্শন নারী ও পুরুষদের প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা হতো। বিশেষ করে চীনের নাগরিকদের এক্ষেত্রে টার্গেট করা হতো।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই