অস্ট্রেলিয়ার ৮ হাজারেরও বেশি ট্যাক্সি এবং ভাড়ায় চালিত গাড়ির চালকদের মোট ১৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হবে রাইড শেয়ারিং জায়ান্ট উবারের কর্তৃপক্ষকে। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর সিডনির একটি আদলত এই রায় দিয়েছেন।

২০১৯ সালে উবারের কাছে এই পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ চেয়ে সিডনির আদালতে মামলা করেছিলেন এই ট্যাক্সি চালকরা। মামলার অভিযোগে তারা বলেছিলেন, ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় উবারের প্রবেশের পর থেকে তারা আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং এই লোকসানের ক্ষতিপূরণ চান তারা।

মামলাটির ওপর দীর্ঘ ৫ বছর শুনানি ও বিচারিক কার্যক্রম করার পর সোমবার রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক। বাদিপক্ষের আইনজীবী মিশেল ডোনেলি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিচার বিভাগের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত ক্ষতিপুরণ আদালত অনুমোদন করেছে, সেসবের মধ্যে অঙ্কের হিসেবে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের এই ক্ষতিপূরণ পঞ্চম বৃহত্তম।

মামলার রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্য উবার ‘সর্বশক্তি দিয়ে’ লড়াই করেছে উল্লেখ করে মিশেল ডনেলে আরও বলেন, ‘মামলার রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্য গত ৫ বছরের প্রতিটি দিন সর্বাত্মক চেষ্টা করে গেছে উবার। প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের অর্থ থেকে আমাদের গ্রাহকদের বঞ্চিত করতে কোনো পদক্ষেপ বাদ রাখেনি তারা।’

‘কিন্তু আদালত এবং বাদিপক্ষ সবসময়ই অবিচল ছিল। এছাড়া বড় সহযোগিতা এসেছে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকেও। তারা উবার বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন। মূলত তারপরেই নমনীয় হয় অ্যাপটির কর্তৃপক্ষ।’

উবারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার পরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগও উঠেছে। মামলার এজাহারে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, অনেক লাইসেন্সবিহীন এবং অদক্ষ গাড়ি চালকও উবার অ্যাপ ব্যবহার করছেন।

বাদিপক্ষের অন্যতম সদস্য নিক অ্যান্ড্রিয়ানাকিস এক সময় ট্যাক্সি চালাতেন। সোমবারের রায়ের পর সাংবাদিকদের জানান, উবারের কারণে তিনি তার ৪০ বছরের ট্যাক্সি পরিষেবা ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

‘আমি আমার কাজের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। সেই সঙ্গে আমি জীবিকা অর্জনের সেই উপায় হারিয়ে ফেলেছিলাম, যা আমার পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার যোগাতো।’

উবার অবশ্য এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ন্যায়বিচার পায়নি। রায়ের পর এক বিবৃতিতে উবার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘এক যুগ আগে যখন উবার চালু হলেছিল, সে সময় রাইড শেয়ারিং বিধি বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব ছিল না।’

‘কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাইড শেয়ারিং নীতিমালা হয়েছে, সেসব উবার মেনে চলে এবং নিয়মিত করও দেয়। বিচার প্রক্রিয়ায় এসব দিককে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।’

সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড

এসএমডব্লিউ