ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কলকাতার গার্ডেন রিচ এলাকায় নির্মাণাধীন ৬ তলা একটি ভবন আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক ডজনের বেশি। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার গভীর রাতে গার্ডেন রিচের বহুতল ভবন ভেঙে পড়ার ঘটনায় আরও দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ভবন ধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে পৌঁছেছে। সোমবার সকাল থেকে দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে আরও চারজনকে উদ্ধার করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গার্ডেন রিচের ভবন ধসে যারা মারা গেছেন, তারা হলেন শামা বেগম (৪৪), হাসিনা খাতুন (৫৫), রিজওয়ান আলম (২২), আকবর আলি (৩৪), মোহাম্মদ ওয়াসিক, মোহাম্মদ ইমরান ও রমজান আলী। তাদের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে রিজওয়ান, আকবর, ওয়াসিক, ইমরান এবং রমজানকে মৃত ঘোষণা করে এসএসকেএম হাসপাতাল।

আনন্দবাজার বলেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও একজন আটকা রয়েছেন। উদ্ধার কাজ চলছে।

তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে, গার্ডেন রিচের ভবন ধসের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতালের পাশাপাশি কয়েকজনকে নেওয়া হয়েছিল এসএসকেএমে। তাদের মধ্যে অন্তত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এসএসকেএম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

ভবন ধসের এই ঘটনায় মোহাম্মদ ওয়াসিম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় রাত ১২টার দিকে গার্ডেন রিচের ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্মাণাধীন বহুতল ভবনটি পাশের বস্তির ওপর ভেঙে পড়ে। এতে কয়েকটি ঝুঁপড়ি ঘর একেবারে গুঁড়িয়ে যায়। ভবন ধসের পরপরই রাতেই সেখানে পৌঁছান কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

কিছু দিন আগে নিজের বাড়িতে পড়ে গিয়ে কপালে চোট পেয়েছেন মমতা। কপালে ব্যান্ডেজ নিয়েই সকালে গার্ডেন রিচে যান তিনি। এ সময় ওই এলাকা ঘুরে দেখেন এবং হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং আহতদের এক লাখ করে টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দেন মমতাও।

মৃত আকবর আলীর পরিবারের সদস্য নাসিরুদ্দিন বলেন, ‘‘আকবর ঘুড়ি তৈরি করত। আমার বোনের অবস্থাও খুব খারাপ। ওখানে ভাড়া থাকত। বাড়িতে কতটা কী ক্ষতি হয়েছে, এখনও জানি না। আমরা সকালে খবর পেয়েছি।’’

এসএস