ফাইল ছবি

ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ হাইতির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। এই ঘটনায় পুলিশের পাল্টা অভিযানে ৩ জন নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে গ্যাং সহিংসতা প্রকট আকার ধারণ করেছে এবং এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল।

বুধবার (২০ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে অন্তত তিনজনকে হত্যা করেছে পুলিশ। গত সোমবার ‘অপরাধীদের একটি দল’ ব্যাংক অব রিপাবলিক অব হাইতিতে (বিআরএইচ) হামলা করে বলে একজন কর্মচারী এএফপিকে জানিয়েছেন। এতে চারজন নিহত এবং একজন প্রহরী আহত হয়েছেন।

এই ঘটনার পর ‘আমাদের সম্প্রদায়কে রক্ষা করার’ জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আমেরিকার দরিদ্রতম দেশ হাইতিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্যাং সহিংসতা আরও খারাপ হয়েছে। গ্যাং গোষ্ঠীগুলো কারাগারে অভিযান চালানো, হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করা এবং প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কার্যত সহিংসতায় নিমজ্জিত রয়েছে দেশটি।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিআরএইচ বলেছে: ‘গতকাল রুয়ে পাভিতে (আমাদের) সাইটের কাছে একটি ঘটনার পর, নিরাপত্তা বাহিনী এবং ব্যাংকের নিরাপত্তা দল পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতার সাথে কাজ করেছে।’

বিবিসি বলছে, সহিংসতার কারণে হাইতির রাজধানীতে বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এরপরও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে এখনও যে কয়েকটি প্রধান প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেগুলোর একটি। যদিও সহিংসতার কারণে শহরটিতে শত শত হাসপাতালও বন্ধ হয়ে গেছে।

বিআরএইচ আরও বলেছে, ‘আমাদের অফিসারদের এবং রাষ্ট্রীয় পুলিশের প্রতি তাদের সতর্কতার জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ’ তারা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তাসংস্থা এএফপি-র সাথে কথা বলা ওই কর্মচারী বলেন, হামলায় অপরাধী চক্রের তিন বা চারজন নিহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, আহত গার্ড গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।

বিবিসি নিউজ অবশ্য স্বাধীনভাবে এই দাবিগুলোর বিষয়ে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি।

মূলত সশস্ত্র দলগুলো হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এমন অবস্থায় ‘বারবিকিউ’ নামে পরিচিত কুখ্যাত গ্যাং লিডার জিমি চেরিজিয়েরের দখলে থাকা পোর্ট-অ-প্রিন্সের এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

জিমি চেরিজিয়ের নামের এই গ্যাং নেতা রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশ কয়েকটি গণহত্যার পেছনে রয়েছে বলে মনে করা হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘ জানায়, গত বছর হত্যা, আহত এবং অপহরণসহ হাইতিতে গ্যাং সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ। যা দেশটিতে ২০২২ সালে সহিংসতার শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।

টিএম