ইউক্রেনে প্রশাসনিক রদবদল অব্যাহত রেখেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সর্বশেষ রদবদলে তিনি তার দীর্ঘদিনের এক সহযোগী এবং বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করেছেন।

অন্যদিকে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রুশ সামরিক বাহিনীর চালানো এসব হামলায় হয়েছে প্রাণহানিও।

রোববার (৩১ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অব্যাহত রদবদলের অংশ হিসেবে শনিবার তার দীর্ঘদিনের এক সহযোগী এবং বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করেছেন। অন্যদিকে রাশিয়া রাতারাতি নতুন করে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে আক্রমণ চালিয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, জেলেনস্কি তার শীর্ষ সহকারী সেরহি শেফিরকে তার প্রথম সহকারীর পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট তার তিনজন উপদেষ্টা এবং প্রেসিডেন্টের দুজন প্রতিনিধিকেও ছেড়ে দিয়েছেন।

তারা স্বেচ্ছাসেবক নানা কার্যক্রম এবং সৈন্যদের অধিকারের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। মূলত সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিস্তৃত পরিসরে জেলেনস্কি একের পর এক প্রশাসনিক রদবদল করছেন এবং সর্বশেষ এই রদবদলের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি।

এর আগে গত মঙ্গলবার ওলেক্সি ড্যানিলভকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তিনি পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তারও আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান পদ থেকে ভ্যালেরি জালুঝনিকে বরখাস্ত করেন জেলেনস্কি।

পরে জালুঝনিকে এই মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করা হয়।

এদিকে ইউক্রেনজুড়ে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী শনিবার বলেছে, রাশিয়া রাতের আঁধারে ১২টি শাহেদ ড্রোন নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে ৯টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এছাড়া পূর্ব ইউক্রেনে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ বাহিনী।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলেছে, রাশিয়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৭৫টি বিমান হামলা এবং একাধিক রকেট লঞ্চার থেকে ৯৮টি হামলা চালিয়েছে।

আঞ্চলিক গভর্নর ভাদিম ফিলাশকিন শনিবার বলেছেন, ইউক্রেনের আংশিক অধিকৃত দোনেৎস্ক প্রদেশে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে দুইজন নিহত ও আরও একজন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি সেন্ট্রেনার্গো জানিয়েছে, পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে জিমিভ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং গত সপ্তাহে রাশিয়ার গোলাবর্ষণের পর এটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।

এই অঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ এখনও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া গত ২২ মার্চ প্ল্যান্টটিতে হামলার পর ৭ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ পরিষেবার বাইরে চলে গিয়েছিলেন।

মূলত সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ বাড়িয়েছে এবং এতে করে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতিও হয়েছে।

পোলতাভা অঞ্চলের কর্মকর্তারা শনিবার বলেছেন, এই অঞ্চলের একটি অবকাঠামোতে ‘বেশ কিছু হামলা’ করা হয়েছে। যদিও এটি বিদ্যুৎ অবকাঠামো কিনা তা উল্লেখ করা হয়নি।

টিএম