পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে গতকাল একইদিনে সভা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। আর দুজনই পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন।  

নরেন্দ্র মোদি হাতিয়ার করেছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি এবং সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের অভিযোগকে। তিনি বলেছেন, তৃণমূলের মন্ত্রীদের ঘর থেকে নোটের পাহাড় মিলেছে। এরা সবাই মিলে অপরাধীদের বাঁচাতে চান। 

নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ প্রসঙ্গে বলেছেন, আমরা চাই বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ হোক। সেখানে আসা-যাওয়া সহজ হোক। তার জন্য আমরা নিরন্তর কাজ করছি। কিন্তু টিমসি, বাম আর ইন্ডি (ইন্ডিয়া) জোট অপপ্রচার করছে। এরা মতুয়া, রাজবংশীদের পরোয়া করে না। 

অন্যদিকে মমতা অভিযোগ করেছেন বিজেপি নিজেদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সংস্থার ব্যবহার করে। তিনি বলেছেন, বিজেপি আদর্শ আচরণবিধি মানে না। কারণ ওটা ওদের ঘরবাড়ি। যার বিয়ে, সেই পুরোহিত। এজেন্সি দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে বলছে যে বিজেপিতে ভোট দাও। আর এজেন্সি থেকে মুক্তি পাও। আমি এজেন্সিকে ভয় পাই না। 

ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলায় অত্যাচার করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি থাকাকালীন ওদের ক্ষমতা নেই যে বাংলার মানুষের গায়ে হাত দেবে। ভোটের আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) করছে। সিএএ হলো মাছের মাথা। আর মাছের ল্যাজা হলো এনআরসি। এই রাজ্যে কোনো সিএএ, এনআরসি হবে না।

তিনি বলেন, বিজেপি চায়, গোটা দেশে একটাই রাজনৈতিক দল থাকবে। তাদের নীতি ওয়ান নেশন, ওয়ান পলিটিক্যাল পার্টি - যা চলতে পারে না। কমিশন দেখুক এখানে বিজেপির হুলিগানিজম চলছে। এটা ডেমোক্রেসির লেভেল প্লেইং ফিল্ড হতে পারে না। 

বিজেপিকে বহিরাগত বলে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ওরা চার লাইন বাংলা বলে। আপনারা অবাক হয়ে ভাবেন, আরে দিল্লি থেকে এসে বাংলা বলছে! আসলে টেলিপ্রম্পটারে বাংলা বলে ওরা। আমাদের মতো নয়। 

এসবের জবাবে নিজের জনসভাতে ঝে মাঝেই বাংলায় কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদি। উল্টো অভিযোগ করেছেন, বাংলার জন্য যা প্রকল্প আনি, তা তৃণমূল সরকার এই রাজ্য চালু হতে দেয় না। 

তৃণমূলসহ যে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাদের কড়া ভাষায় কটাক্ষ করে মোদি বলেছেন, মোদি কড়া এবং বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৪০ কোটি মানুষের কথা ভেবে। দরিদ্র মানুষের কথা ভাবে মোদি।  

নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিজেপিই পারে বাংলার নারীদের রক্ষা করতে। বাংলা এবং পুরো দেশ দেখেছে সন্দেশখালির অপরাধীদের বাঁচাতে টিমসি কী করেছে। কিন্তু ওরা যাতে শাস্তি পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করব। নারীর ক্ষমতায়ন বিজেপির প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র : বিবিসি বাংলা। 

এনএফ