পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় নির্বাচনে জয়ের পথে রয়েছে বিরোধী ব্লক। বুধবার (১০ এপ্রিল) দেশটিতে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

মূলত বিশ্লেষকদের অনেকেই এই নির্বাচনকে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলের টিকে থাকার প্রশ্নে ‘গণভোট’ হিসেবে দেখছিলেন। আর এই নির্বাচনেই জিততে চলেছে বিরোধী ব্লক।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার উদারপন্থি বিরোধী ব্লক বুধবারের নির্বাচনের পর সংসদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সকল ভোট গণনাই প্রায় সম্পন্ন হয়েছে এবং ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপিকে) ও তাদের ছোট একটি মিত্র জাতীয় পরিষদের ৩০০ টি আসনের মধ্যে ১৭০ টিরও বেশি আসন জিততে চলেছে।

বিবিসি বলছে, বুধবারের এই নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউলের মেয়াদের মধ্যবর্তী গণভোট হিসাবে দেখা হচ্ছে। তার পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) ইতোমধ্যেই ডিপিকে অধ্যুষিত আইনসভায় নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংগ্রাম করছে।

মূলত দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (ডিপিকে) আধিপত্য রয়েছে। দলটির অভিযোগ, ইউন ও তার রক্ষণশীল দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) দেশের অর্থনীতিকে ঠিকভাবে সামাল দিতে পারছে না। তারা মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতেও ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

এছাড়া প্রেসিডেন্ট ইউনের কাছ থেকে ভেটো ক্ষমতা কেড়ে নিতে হলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে বড় ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে হবে। আর সেটির জন্য তাদের ২০০ আসনে জয় পেতে হবে।

বিবিসি বলছে, বুধবারের নির্বাচনে সাফল্য সত্ত্বেও বিরোধী ব্লক সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সেটি হলে তারা প্রেসিডেন্টের ভেটো ক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করতে বা বাতিল করতে এবং সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করার সুযোগ পাবেন।

তবে এই ফলাফল অবশ্য আবারও নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিউংকে আরও উৎসাহিত করতে পারে। তিনি ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইউনের কাছে অল্প ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন।

বিবিসি বলছে, ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্য, দ্রুত বার্ধক্য জনসংখ্যা এবং ডাক্তারদের চলমান ধর্মঘটসহ বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধানের জন্য প্রেসিডেন্ট ইউন বর্তমানে চাপের মধ্যে রয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভোটারদের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবের কারণেও তিনি সমালোচিত হয়েছেন।

এছাড়া তার স্ত্রী কিম কিওন হিও বিলাসবহুল ব্যাগ উপহার হিসেবে গ্রহণ করার অভিযোগে বিতর্কে জড়িয়েছেন। এর পাশাপাশি তার দলের সিনিয়র সদস্যদের বিরুদ্ধে পৃথক দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও আনা হয়েছে।

অন্যদিকে বিরোধী ডিপিকে তার নিজস্ব রাজনৈতিক বিতর্ক এবং অভ্যন্তরীণ সংগ্রামে বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীনও হয়েছে।

টিএম