সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ এই আবহাওয়ার কারণে প্লাবিত হয়েছে দুবাই বিমানবন্দর। এমনকি বৃষ্টিপাতের জেরে এই বিমানবন্দরের বেশ কয়েকটি ফ্লাইটকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করা হয়।

মূলত ভারী বৃষ্টিপাত ও এর জেরে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত শুষ্ক জলবায়ু এবং গরম তাপমাত্রার জন্য পরিচিত দুবাই শহর মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিপাতের পর বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত হয়েছে। মূলত বৃষ্টিপাতের কারণে সমগ্র আরব আমিরাতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এতে করে দেশটিতে আকাশপথে ভ্রমণ ব্যাহত হয়েছে এবং মরুভূমির এই দেশজুড়ে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে।

অপ্রত্যাশিত এই প্রলয় শুধুমাত্র আলোড়ন সৃষ্টিকারী দুবাই শহরকে স্থবিরই করে দেয়নি বরং এই অঞ্চলের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান স্পষ্ট প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও সামনে এনেছে।

এনডিটিভি বলছে, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সারা বিশ্বের যাত্রীদের জন্য ব্যস্ততম এয়ার হাব হিসেবে পরিচিত। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এই বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা বিপজ্জনক হওয়ার কারণে অসংখ্য আগত ফ্লাইট সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর বলে পরিচিত দুবাইয়ে মঙ্গলবার থেকেই ফ্লাইট চলাচল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলত ঝোড়ো বাতাসের কারণে বিমানবন্দরটিতে ফ্লাইট ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটে।

এই অবস্থায় একের পর এক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট হয় বাতিল, নয়তো তার শিডিউল পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে দুবাইয়ে এমিরেটসের ফ্লাইট-সূচিতে। দুবাই থেকে বিশ্বের প্রায় সব বড় শহরেই ফ্লাইট রয়েছে সংস্থাটির। এছাড়া কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট চলাচলও ব্যাহত হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের ভেতরেই প্লাবিত রানওয়েতে বিমানগুলো ট্যাক্সি করছে। এছাড়া বিমানবন্দরের পার্কিং লটে গাড়িগুলোকে অর্ধেক ডুবে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি বিমানবন্দরের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলোও পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়া দুবাই মল এবং মল অব দ্য এমিরেটসের মতো ফ্ল্যাগশিপ শপিং সেন্টারসহ শহরের মূল অবকাঠামোগুলোও প্লাবিত হয়েছে এবং দুবাইয়ের অন্তত একটি মেট্রো স্টেশনকে গোড়ালি-গভীর পানিতে প্লাবিত হতে দেখা গেছে।

অনেক স্থানে রাস্তা ধসে পড়েছে, আবাসিক এলাকাও নিমজ্জিত হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়ির ছাদ, দরজা এবং জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

অবশ্য বৃষ্টি ও ঝড়ের প্রভাব দুবাইয়ের বাইরেও প্রসারিত হয়ে সমগ্র সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং প্রতিবেশী বাহরাইন বন্যা এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। বার্তাসংস্থা এএফপি-এর মতে, আমিরাতজুড়ে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং শিলাবৃষ্টিসহ আরও ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

টিএম