মিয়ানমারে দুই বিমানঘাঁটিতে আজ বৃহস্পতিবার অজ্ঞাত হামলাকারীরা রকেট হামলা করেছে। কোন প্রাণহানি না হলেও  সামান্য ক্ষতি হয়েছে বিমানঘাঁটি দুটির। হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। নিউজ ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।    

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই হামলার খবর জানিয়ে লিখেছে, তিন মাস আগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটছে এই হামলা তারই লক্ষণ।

মিয়ানমারের কয়েকটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে কয়েক দশক ধরে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তারা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভদের সমর্থন দিয়েছে। তবে বড় ধরনের সামরিক স্থাপনায় এ ধরনের হামলার ঘটনা বিরল। 

যেখানে হামলাগুলো হয়েছে

প্রথম হামলাটি হয়েছে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর মাগওয়েতে অবস্থিত একটি বিমানঘাঁটিতে। বৃহস্পতিবারের দিনের শুরুতে ওই বিমানঘাঁটিতে চারটি রকেট হামলা করা হয়। ইন্টারনেটে দেওয়া সামরিক বাহিনীর নিউজ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই নিউজ ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, চারটির মধ্যে তিনটি রকেট ফার্মে এবং অপরটি একটি সড়কে আঘাত হানে। ওই হামলায় ঘাঁটিটির একটি ভবন হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাতে কেউ হতাহত হয়নি। হামলার পর সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।  

পরে মধ্যাঞ্চলেরই আরেক শহর মেইকতিলায় মিয়ানমারের অন্যতম প্রধান বিমানঘাঁটিতে পাঁচটি রকেট আঘাত হানে। বিমানঘাঁটিটির উত্তর দিকে অবস্থিত একটি ফার্ম থেকে রকেটগুলো ছোড়া হয়। তবে সেখানেও কোনো হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। 

ঘটনার সময় কাছাকাছি থাকা সাংবাদিক থান উয়িন হ্লাইং ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ক্লিপ পোস্ট করেছেন। এতে মাথার ওপর দিয়ে রকেট উড়ে যাওয়ার মতো আওয়াজ ও এরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে ক্লিপটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

সামরিক বাহিনীর ওপর হামলা বাড়ছে

গত মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে এক সামরিক ঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন আর্মিদের লড়াই হয়। লড়াইয়ে সেনাবাহিনী সশস্ত্র বিদ্রোহীদের কাছে হার মানে। পড়ে ওই ঘাঁটিটি তারা পুড়িয়ে দেয়।

অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের প্রধানসহ অন্যদের আটক করার মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেয়। এরপর বিক্ষোভ শুরু হলে তা দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস অভিযানে আট শতাধিক মানুষ এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন।

এএস