ভারতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনেকটাই বিপর্যস্ত দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ভাইরাসে। হাসপাতালগুলোতে জায়গা নেই, রয়েছে অক্সিজেনের তীব্র সংকটও। ফলে দৈনিক মৃত্যুও রয়েছে সাড়ে তিন হাজারের আশেপাশে। এই পরিস্থিতিতে সংকট মেটাতে নাইট্রোজেন প্লান্টেই অক্সিজেন তৈরির পরিকল্পনা করছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রোববার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনী ফলাফলের দিনক্ষণ নির্ধারিত থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই তিনি নাইট্রোজেন প্লান্টগুলোকে অক্সিজেন প্লান্টে রূপান্তরিত করার খোঁজ নেন।

অক্সিজেন প্লান্টে রূপান্তরিত করতে এখন পর্যন্ত ১৪টি নাইট্রোজেন প্লান্টকে বেছে নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। চাহিদা মেটাতে আরও ৩৭টিকে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এটা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করতে মোদি মূলত রোববার বৈঠকে বসেন।

নাইট্রোজেন উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত প্লান্টগুলো ঠিক কীভাবে অক্সিজেন উৎপাদনে কাজ করবে? নাইট্রোজেন প্লান্টে ব্যবহৃত হয় সিএমএস। অন্যদিকে অক্সিজেন প্লান্টে প্রয়োজন জিওলাইট মলিকিউলার সিব বা জেডএমএস। এ জন্য সিএমএসকে জেডএমএসের সঙ্গে পরিবর্তন করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে আনতে হবে আরও কিছু পরিবর্তন। অক্সিজেন অ্যানালাইজার, কন্ট্রোল প্যানেল, ফ্লো ভালভ-সহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতিও পরিবর্তন করতে হবে।

মোদি সরকারের পরিকল্পনা, অক্সিজেন প্লান্টগুলো তৈরি হয়ে গেলেই সেগুলোকে বিভিন্ন হাসপাতালের কাছে স্থাপন করা হবে। তবে যদি তা করতে সমস্যা হয়, তাহলে অক্সিজেন তৈরির পর তা সিলিন্ডারে করে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে টানা কয়েকদিন ধরে ভারতে দৈনিক মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়লেও সোমবার তা কিছুটা কমে এসেছে।

সোমবার (৩ মে) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৭ জন। এ নিয়ে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৪১৭ জন। এতে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৯ জনে।

ভাইরাসে আক্রান্ত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভারতে বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। দেশটিতে এখন মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩৪ লাখ ১৪ হাজার। বিপুল সংখ্যক এই সক্রিয় রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত।

টিএম