ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই ধরাশায়ী হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তবে দলটির প্রাপ্তি বলতে এতটুকুই যে, নির্বাচনে কঠোর লড়াইয়ের মাধ্যমে খোদ মমতাকে হারিয়েছেন তারই এক সময়কার শিষ্য শুভেন্দু অধিকারী। আর এর পুরস্কারও পেয়েছেন হাতেনাতেই। নির্বাচিত হয়েছেন বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতার পদে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সোমবার (১০ মে) কলকাতার হেস্টিংসে নির্বাচনী কার্যালয়ে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর নাম প্রস্তাব করেন তৃণমূলের এক সময়কার সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়। সেই প্রস্তাবে সমর্থন দেন বিজেপির নবনির্বাচিত ২২ জন বিধায়ক। শুভেন্দুর নামের বিপরীতে আর কোনো নাম আসেনি। ফলে সর্বসম্মতিতে বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হন শুভেন্দু।

দুই দশকেরও বেশি সময় তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে তিনিই ছিলেন মমতার মূল সেনাপতি। সেই শুভেন্দুই এখন বিজেপির তথা বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা।

গত ডিসেম্বরে দলের সঙ্গে ‘টানাপোড়েনের পর’ প্রত্যাশিতভাবেই বিজেপিতে নাম লেখান শুভেন্দু। সেসময় পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর কলেজ মাঠে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির অন্যতম প্রধান নীতিনির্ধারক অমিত শাহকে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৭টিতে। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ২টি আসনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।

এরপর গত বুধবার টানা তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সোমবার (১০ মে) শপথ নেন মমতার ৪৩ সদস্যের মন্ত্রিসভা। একইদিনে ‘জায়ান্ট কিলার’ শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত করল বিজেপি।

এটা এখন স্পষ্ট যে, সাবেক গুরু ও শিষ্যের এই ‘রাজনৈতিক খেলা’ তথা প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলতেই থাকবে।

টিএম