প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর কলকাতার বেশকিছু এলাকায়। মঙ্গলবারের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বিদ্যুৎপৃষ্ট ও বাজ পড়ে মারা গেছেন মোট ৬ জন।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকা এবং পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাংশের জেলাগুলোতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে ঝড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টিপাত। এছাড়া হাওড়া, মুর্শিদাবাদসহ কয়েকটি জেলায় ঘটেছে টানা বজ্রপাতের ঘটনা।

মঙ্গলবার কলকাতায় রাজ্যপালের বাসভবনের সামনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হাইকোর্ট থেকে ধর্মতলার দিকে আসছিলেন ওই ব্যক্তি। মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন তিনি। সে সময় রাজ্যপালের বাসভবনের সামনে পানিতে ডুবে থাকা ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান ওই ব্যক্তি।

নিহতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ এসে সড়কের পানিতে ভাসমান অবস্থায় ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে।

এদিকে, বৃষ্টির পানিতে গোটা কলকাতা শহরই দৃশ্যত তলিয়ে গেছে। অধিকাংশ সড়কে হাঁটু বা কোমর পর্যন্ত জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বন্ধ হয়ে যায় অধিকাংশ যান চলাচল। কলকাতার ধর্মতলা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, শ্যামবাজার, বেলগাছিয়া, যাদবপুর, টালিগঞ্জ, মেটিয়াব্রুজ, পাইকপাড়া, মধ্যমগ্রাম, বারাসাত, ঠাকুরপুকুর, বিমানবন্দর, নাগের বাজার, গড়িয়াহাট, শিয়ালদহ, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিটসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে যায়। অনেক এলাকায় মানুষজনকে নৌকায় চলাচল করতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, নদীয়ার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টিসহ টানা বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জেলায় বজ্রপাতে এ পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।

মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ থানার পুঠিমারি মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা গেছেন নাজির হোসেন (৩৫) নামের এক কৃষক। পূর্ব বর্ধমান জেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন দুজন। তাদের নাম শরিফ মুন্সী ও সঞ্জয় প্রমাণিক। হাওড়া জেলায় বজ্রপাতে মারা গেছেন দুজন। সেখানে মৃতদের মধ্যে একজনের নাম অশোক বিশ্বাস, অন্যজনের নাম জানা যায়নি।

ভারী বৃষ্টিতে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। অনেক ফসলের খেত তলিয়ে গেছে। বেশ কিছু জায়গায় গাছপালা উপড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি। জমিতে কেটে রাখা ধান বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।

এসএমডব্লিউ