দাবদাহ আর সমুদ্রপৃষ্ট্রের উচ্চতা হ্রাসের কারণে শীর্ষে রয়েছে জাকার্তা

পরিবেশগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা বিশ্বের শীর্ষ ১০০ শহরের মধ্যে ৯৯টি এশিয়ার এবং শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ এসব শহরের প্রতি পাঁচটির মধ্যে চারটি ভারত কিংবা চীনের। পরিবেশগত ঝুঁকি মূল্যায়ন করে বৃহস্পতিবার একশ শহরের এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।  

সদ্য প্রকাশিত এই তালিকায় বিশ্বজুড়ে ৪০০টির বেশি শহর ‘উচ্চ’ কিংবা ‘মারাত্মকভাবে’ পরিবেশগত ঝুকিঁপুর্ণ শহর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তালিকায় পরিবেশগতভাবে শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ এসব শহরে ১৫০ কোটি মানুষ বসবাস করেন বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী আয়ুষ্কাল কমানোর মতো দূষণ, পানির সরবরাহ হ্রাস, প্রাণঘাতী দাবদাহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ঠ নানান পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে এই তালিকাটি প্রণয়ন করা হয়েছে।  

পরিবেশগত দূষণের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। বলা হচ্ছে, দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার 
ডুবতে থাকা এই রাজধানী শহর বন্যা ও দাবদাহের মতো নানা দুর্যোগকবলিত। আগামীতে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে শঙ্কা। 

সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি হলো ভারত। বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের ১৩টি ভারতের। এখন যথযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে দেশটির অবস্থা আরও ভীতিকর হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। 

পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনা করে ভেরিস্ক ম্যাপলোক্রফ্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের করা জরিপে ৫৭৬টি শহরের নাম উঠে এসেছে। তাতে জাকার্তার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শহর হিসেবে উঠে এসেছে ভারতের জাতীয় রাজধানী শহর দিল্লির নাম। 

তালিকায় এরপর যথাক্রমে ৩য় অবস্থানে চেন্নাই, ৬ষ্ঠ অবস্থানে আগ্রা, ১০ম অবস্থানে কানপুর, ২২তম অবস্থানে জয়পুর, ২৪তম অবস্থানে লক্ষ্মৌ এবং ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত সোয়া কোটি মানুষের শহর মুম্বাই রয়েছে ২৭তম অবস্থানে।

পানিদূষণের কারণে ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি শহরের মধ্যে ৩৫টি চীনের। ভেরিস্ক ম্যাপলোক্রফ্ট থেকে প্রকাশিত ওই তালিকায় থাকা শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ১০০ শহরের মধ্যে এশিয়ার বাইরে রয়েছে একটি শহর। সেটি হলো লাতিন অঞ্চলের দেশ পেররুর রাজধানী লিমা। 

রিপোর্টটির প্রধান লেখক উইল নিকোলস এএফপিকে বলেন, ‘বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার বাসস্থান এবং অর্থনীতির মূল চালক এই মহাদেশের শহরগুলো ইতোমধ্যে মারাত্মক বায়ুদূষণ, পানির ঘাটতি এবং প্রাকৃতিক ঝুঁকির কারণে গুরুতর চাপের মুখে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক এশীয় দেশে জনসংখ্যার চাপ বৃদ্ধি পাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ এবং চরম আবহাওয়ার হুমকি দিন দিন আরও বাড়ছে। এতে জাতীয় অর্থনীতি হিসেবে সম্পদ বৃদ্ধিতে তাদের ভূমিকার বিষয়টিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’

এএস