ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজায় স্থানীয় কার্যালয় ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলেছে, তারা চুপ হবে না। শনিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মাত্র এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে গাজায় কাতারের এই সংবাদমাধ্যমের স্থানীয় কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

আল-জাজিরায় প্রচারিত লাইভে দেখা যায়, বোমার আঘাতে গাজার আল-জালা নামের ১৩ তলা ভবনটি ধসে পড়ছে। আকাশচুম্বী ওই ভবনে আল-জাজিরা ছাড়াও মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) কার্যালয় ছিল।

জেরুজালেমে আল-জাজিরার ব্যুরো চিফ ওয়ালিদ আল-ওমারি বলেন, এটা পরিষ্কার— গাজায় যারা যুদ্ধ বৃদ্ধি করে চলেছে তারা শুধুমাত্র ধ্বংস এবং মৃত্যুর বিস্তার চাচ্ছেন না; বরং গাজায় যা ঘটছে, সেগুলো প্রত্যক্ষ করে তথ্য সংগ্রহ এবং সত্য ঘটনার প্রতিবেদন যেসব গণমাধ্যম তুলে ধরছে, তাদের চুপ করিয়ে দিতে চায়।

গাজার ১৩ তলা ভবনটি ধসে যাওয়ার পর আল-জাজিরার লাইভ সম্প্রচারে ওয়ালিদ আল-ওমারি বলেন, ‘কিন্তু এটা অসম্ভব। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কর্তৃক ধারাবাহিক যে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে এটি তারই অংশ।’

হামলা চালানোর আগে ভবনটির মালিক জাওয়াদ মেহেদিকে এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় চেয়ে ইসরায়েলি একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে বারবার অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু তার এই অনুরোধে কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। পরে ভবনটি স্বল্প সময়ের মধ্যে খালি করা হয়।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক টুইট বার্তায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে। টুইটে বলা হয়েছে, ওই ভবনটিতে গাজার ক্ষমতাসীন দল হামাসের সামরিক সম্পত্তি ছিল। এছাড়া ওই ভবনের বাসিন্দাদের ‌‘মানব-ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছিল হামাস।

এদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলা টানা ষষ্ঠ দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। এর মাঝেই শনিবার ভোরের দিকে এই উপত্যকার একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যাদের আটজনই শিশু।

শুক্রবার সংঘাত ছড়িয়েছে গাজা থেকে বিচ্ছিন্ন ফিলিস্তিনের অপর অংশ পশ্চিম তীরেও। এদিন পশ্চিম তীরেও অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত কয়েশ শত। ইসরায়েলি সেনাদের গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেটে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার থেকে ইসরায়েলের টানা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ শিশুসহ ১৪০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।

সূত্র: এএফপি, বিবিসি।

এসএস