ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে ‘অত্যন্ত মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নেওয়া তওকতের আঘাতে গুজরাটের ১২ জেলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ জনে উন্নীত হয়েছে। দেশটির অন্যতম জাতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া আউটলুককে এ তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের জরুরি পরিস্থিতি ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মকর্তারা।

তওকতের আঘাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র বিভাগের আমরেলি জেলায়। সেখানে মারা গেছেন ১৫। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে এই জেলা। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার রাত থেকে তীব্রমাত্রায় ঝড় শুরুর পর মঙ্গলবার দুপুরে শান্ত হয়েছে সেখানকার আবহাওয়া পরিস্থিতি।

আমরেলির বাইরে বেশি সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে গুজরাটের দুই উপকূলীয় জেলা ভাবনগর ও গির সোমনাথে। দুই জেলাতেই আট জন করে মোট ১৬ জন মারা গেছেন।

এছাড়া রাজধানী আহমেদাবাদে ৫ জন, খেড়া জেলায় ২ জন এবং আনন্দ, ভাদোদারা, সুরাট, বালসাড়, রাজকোট, নবসারি ও পঞ্চমহল জেলায় ১ জন করে তওকতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ বিভাগের কর্মকর্তারা।

নিহতদের মধ্যে ২৪ জন মারা গেছেন ঝড়ের কারণে, ৬ জন মারা গেছেন ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ার কারণে এবং ১০ জন মারা গেছেন ঝড়ের কারণে বাড়িঘর ভেঙে পড়ার কারণে।

সোমবার রাতে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলীয় এলাকায় আছড়ে পড়ে তওকত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি বলেছেন,  ঝড়ের তাণ্ডবে ওই রাজ্যে বিদ্যুতের হাজার হাজার খুঁটি উপড়ে পড়ে। এতে গুজরাটের প্রায় ২ হাজার ৪০০ গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়।

ঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতির বিশদ বিবরণ তুলে ধরে বিজয় রুপানি বলেন, ঝড়ের কারণে রাজ্যের প্রায় ১৬০টি সড়ক ধ্বংস হয়েছে, উপড়ে পড়েছে ৪০ হাজারের বেশি গাছ। কয়েকশ বাড়িঘর উড়ে গেছে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, তওকতের আঘাতের আগে গুজরাটের উপকূলীয় এলাকার ২ লাখের বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। সোমবার রাতে এই ঝড়টি রাজ্যের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে।

গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছিল তওকত। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতে এই ঝড় দেশটির সরকারের ওপর নতুন চাপ তৈরি করেছে।

গুজরাটের ভবনগর জেলার শীর্ষ কর্মকর্তা গওরং মাকওয়ানা বলেছেন, আমরা বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অক্সিজেন সরবরাহে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে।

এসএমডব্লিউ