‘মৃত ইঁদুরটিই একমাত্র ভালো ইঁদুর’ বলে এই সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার। নতুন একটি ‘প্লেগে’ বিপর্যস্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে আক্রমণ ঠেকাতে ইঁদুর নিধন শুরুর আগে এ ঘোষণা এলো।

কয়েক মাস ধরেই দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া বর্ডার থেকে শুরু করে পুরো অঞ্চলে ইঁদুর ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে আসছিল। লাখ লাখ ইঁদুরের আক্রমণে ফসলি জমি ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ফসল ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় লাখ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে। ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে দেশটির মানুষ। এ অবস্থায় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ইঁদুর নিধন করতে বিষ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পেশাদার ক্লিনার সু হডজের মতে, শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধার্ত ইঁদুরগুলো মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।

ছোট্ট একটি শহর ক্যানোউইন্ড্রা। সিডনি থেকে এই শহরে যেতে পশ্চিমে চার ঘণ্টার যাত্রা করতে হয়। এখানেই হডজ তার দিনগুলো কাটান নানা ফাঁদ পেতে ইঁদুর মেরে। পেশাদার এই নারী ক্লিনার মানুষের রান্না ঘর, বাচ্চাদের রুম এবংকি বেডরুম থেকেও ইঁদুরের মল পরিষ্কারের কাজটি করছেন।

শহরের প্রধান সড়ক ধরে একটু এগোলেই হডজের নিজের বাড়ি। সেখানে তিনি ইঁদুরের বিচরণ ঠেকাতে প্রতিটি ফাঁকফোকর স্টিলের পাত দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। ‘আমি ইঁদুর ধরতে পারি এবং মারতে পারি,’ নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন হডজ। তিনি কীভাবে ফাঁদ পেতে প্রতিরাতে ইঁদুরকে খাঁচায় বন্দি করে তা দেখান। হডজ খাঁচায় এমন একটি ফাঁদ পেতেছেন, যেটি ইঁদুরের দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত করে।

কিন্তু নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার আরও শক্ত কঠোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, তারা পাঁচ হাজার লিটার ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ইঁদুর মারার কেমিক্যাল’ মজুদ করেছে। এই কেমিক্যালের একটি ডোজেই ইঁদুরের মৃত্যু হবে।

সরকারের এই পদক্ষেপে যে সবাই খুশি তেমন কিন্তু নয়। অনেকে বিষ প্রয়োগে ইঁদুর নিধনের বিরোধিতা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, খাদ্যশস্য বাঁচাতে এই কেমিক্যাল দিয়ে ইঁদুর মারতে গেলে অন্য প্রাণীও হুমকিতে পড়তে পারে।

সূত্র: সিএনএন

এসএসএইচ