টিকার দুই ডোজে বেশি ব্যবধান তিনগুণ উপকারী
করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যে সময়ের ব্যবধান বাড়ালে শরীরে প্রতিরোধী শক্তি (অ্যান্টিবডি) ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ দেরিতে নিলে মানবদেহে করোনা প্রতিরোধী প্রোটিন বা অ্যান্টিবডির পরিমাণ ২০ শতাংশ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি থাকে। গবেষণাপত্রটি এখন পিআর রিভিউ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
গবেষকদলের অন্যতম সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিকের টিকা গবেষণা বিভাগের পরিচালক ও জীবাণুবিদ গ্রেগরি পোল্যান্ডে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি যদি পারতাম, এই মুহূর্তে সবার জন্য টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া বন্ধ ঘোষণা করতাম। আমার মতে, বিশ্বের যত বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে, মহামারি থেকে মুক্তির প্রাথমিক স্তরে তত দ্রুত আমরা পৌঁছাতে পারব।’
‘টিকার ডোজের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে সেই দেশগুলোর সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, যত বেশি সম্ভব মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দিন। দ্বিতীয় ডোজ পরে দিলেও চলবে।’
বিজ্ঞাপন
২০২০ সালের শেষে যখন করোনার টিকা বাজারে আসে, তখন দু’ডোজ টিকার মাঝে ব্যবধান রাখার কার্যকারিতার বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ দেশ তাদের সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে টিকা দিয়েছিল।
ব্রিটেনই প্রথম দেশ, যেটি দু’ডোজ টিকা নেওয়ার ব্যবধান বাড়িয়েছিল। দেশটির সরকারি আদেশ অনুযায়ী, দু’যোজের টিকা নেওয়ার মধ্যকার ব্যবধান ছিল ১২ সপ্তাহ। প্রথমদিকে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনাও হয়েছিল ব্রিটেন ও বিশ্বজুড়ে।
কিন্তু ব্রিটেন যে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা বর্তমানে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত; এবং ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও একই পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি করোনা টিকা কোভিশিল্ডের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার মধ্যকার ব্যবধান বাড়িয়েছে সরকার।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার বিষয়ে বলা হযেছিল। পরে তা বাড়িয়ে ৬-৮ সপ্তাহ করা হয়। এরপর সরকারের নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ১২-১৬ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
এসএমডব্লিউ