দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিমানবন্দরে ১৮১ জন আরোহীসহ একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ২৯ জন মারা গেছে বলে বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে। থাইল্যান্ড থেকে ফেরার পথে দেশটির মুয়ান শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বিমানটি।

এদিকে বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিমানটির রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে বিমানটিকে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে যেতে এবং একটি দেওয়ালে গিয়ে বিধ্বস্ত হতে দেখা যায়।

বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেজু এয়ারের পরিচালিত একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান রোববার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং এতে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে দুর্ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া যন্ত্রণাদায়ক একটি ভিডিওতে টুইন-ইঞ্জিন এই প্লেনটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে একটি দেওয়ালে বিধ্বস্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।

এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে আকাশে বিশাল কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠেতে দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া এসব ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, প্লেনের কিছু অংশে আগুন লেগেছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে “বেলি ল্যান্ডিং” (বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার সম্পূর্ণভাবে প্রসারিত না করে) অবতরণ করার চেষ্টা করেছে। বিমানটিতে ছয়জন ক্রু সদস্যসহ ১৮১ জন আরোহী ছিলেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত দুই ব্যক্তি যাদেরএকজন যাত্রী এবং অন্য এক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে জীবিত পাওয়া গেছে। স্থানীয় দমকল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ২৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছি... তবে গুরুতর আহতদের কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।”

কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনাকবলিত ওই জেটের পেছনের অংশ থেকে যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৯টার দিকে বিমানবন্দরে জরুরি সেবা কার্যক্রম শুরু হয়। দুর্ঘটনাস্থলে কমপক্ষে ৩২টি ফায়ার ট্রাক এবং বহু সংখ্যক দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।

অনলাইন ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুসারে, জেজু এয়ারের এই বিমানটি থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান যাচ্ছিল।

এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক সর্বাত্মক উদ্ধার প্রচেষ্টার নির্দেশ দিয়েছেন। তার চিফ অব স্টাফও এই ঘটনা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টিএম