অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির পর গতকাল মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। মঙ্গলবার তেল আবিবে নেমে প্রথমে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, তারপর দখলকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বিবদমান দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ বুধবার মিসরে পৌঁছেছেন ব্লিঙ্কেন।

মিসরের মধ্যস্থতায় সম্প্রতি ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর থেকে বিচ্ছিন্ন গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাসের টানা ১১ দিনের রক্তক্ষয় যুদ্ধে লাগাম পড়েছে। মূলত দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানো ও ফিলিস্তিন সংকটের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত থাকার কারণে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সফর শেষে মিসর সফরে গেলেন বাইডেন প্রশাসনের প্রধান কূটনীতিক অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য সফরের দ্বিতীয় দিনে মিসর পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মিসরের মধ্যস্থতায় যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে তা আরও জোরদার ও কার্যকর করতেই বাইডেনের নিদের্শে তার এই মধ্যপ্রাচ্য সফর। মিসর সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের।

মিসর থেকে জর্ডান সফরে যাবেন ব্লিঙ্কেন। সেখানে দেশটির বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ব্লিঙ্কেনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরুর আগে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসিকে ফোন করেন। ফোনালাপে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কূটনৈতিক সাফল্যের জন্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করায় মিসরকে ধন্যবাদ জানান তিনি। 

মঙ্গলবার জেরুজালেম সফরকালে ব্লিনকেন ইসরায়েলের হামলার পর গাজা পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্র অবদান রাখবে এবং সহায়তা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হামাস মানবিক ত্রাণ থেকে যাতে লাভবান না হয় তা যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করবে।

ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা জানি, সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আমাদেরকে এই আপাত শান্ত অবস্থাকে অন্যান্য ইস্যু এবং চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কাজে লাগাতে হবে। আর তা শুরু হতে পারে গাজার গুরুতর মানবিক পরিস্থিতি সামাল কিংবা গাজা পুনর্গঠন করা দিয়ে।’

গাজা উপত্যকায় গত ১০ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় অন্তত ২৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৬ নিষ্পাপ শিশু ও শতাধিক নারী রয়েছেন। ইসরায়েলের হামলায় বাড়িঘর ধ্বংস হওয়া ছাড়াও এক হাজার ৯০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। একই সময়ে হামাসসহ অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর হামলায় ইসারায়েলে দুই শিশুসহ প্রাণ হারান ১২ জন ইসরায়েলি। 

এএস