করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারত যখন কোভিড-১৯ টিকার সংকটে ভুগছে, ঠিক সেই সময়ই আশার আলো হয়ে সামনে এসেছে সেরাম ইনস্টিটিউট। জুন মাসেই ভারত সরকারকে কোভিশিল্ড টিকার ১০ কোটি ডোজ সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে লেখা এক চিঠিতে সেরাম একথা জানায়।

চিঠিতে সেরাম ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, জুন মাসে ৯-১০ কোটি ডোজ করোনা টিকা উৎপাদন এবং সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। মে মাসের তুলনায় জুন মাসে বেশি টিকা উৎপাদন করা হবে। মে মাসে উৎপাদন করা হয়েছে সাড়ে ৬ কোটি ডোজ টিকা।

ভারতে টিকার সংকট নিয়ে রাজ্যগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন পক্ষ থেকে বার বারই প্রশ্ন উঠছে। পর্যাপ্ত টিকার সরবরাহ না পাওয়ার কারণে অনেক রাজ্যে ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার কাজও বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে সমালোচনার শিকার হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির সরকার।

এছাড়া টিকা সরবরাহ এবং সংকট নিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য। এছাড়া সংকট মেটাতে পাঞ্জাব এবং দিল্লি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশি টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে টিকা কেনার চেষ্টা করলেও কিন্তু টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা ভারত সরকারের সঙ্গেই আলোচনা করবে। ফলে সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে বিভিন্ন রাজ্য।

মোদি সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজ্যে কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় হাতে পাওয়া সেসব টিকার পরিমাণ খুবই কম। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে রাজ্যগুলোকে।

তবে সেরাম জানিয়েছে, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে জুন মাস থেকে টিকার উৎপাদন আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে তারা।

সেরামের কোভিশিল্ড ছাড়াও দেশে তৈরি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন এবং রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-৫ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ভারত। গত ১৬ জানুয়ারি দেশটিতে গণহারে টিকাদান শুরু হয়। তবে বর্তমানে দেশটিতে টিকার চরম সংকট চলছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে সাইরাস পুনাওয়ালার হাত ধরে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কর্ণধার সাইরাসের ছেলে আদর পুনাওয়ালা।

টিএম