নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ নাইজারের একটি ইসলামিক স্কুল থেকে ১৩৬ শিশুকে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। গত রোববার এই ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন ও স্কুলটির মালিক সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বৃহস্পতিবার।

গত রোববার নাইজারের সালিহু তানকো ইসলামিক স্কুলে একদল বন্দুকধারী দুষ্কৃতিকারী হামলা করে এবং ৩ শিক্ষকসহ ১৩৬ জন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা মোটর সাইকেলে করে এসেছিল। অপহরণের সময় স্কুলের একজন কর্মচারী বাধা দিতে এলে তাকে হত্যা করে দুষ্কৃতিকারীরা।

সালিহু তানকো ইসলামিক স্কুলটির স্বত্ত্বাধিকারী ওমর ইদ্রিস মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, অপহৃত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এর চেয়ে বেশিও হতে পারে। কারণ, এখন পর্যন্ত ১৩৬ জন শিশুর অভিভাবক তাদের সন্তানদের অপহৃত হওয়ার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

‘আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি এবং অপহৃত শিশুদের প্রকৃত সংখ্যা জানার চেষ্টা করছি।’— এপিকে বলেন উমর ইদ্রিস।

আশিরু আদামু ইদ্রিসা নামের এক অভিভাবক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার তিন মেয়েকে চোখের সামনেই অপহরণ করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতিকারীরা। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোটজনের বয়স মাত্র ৫ বছর।

ইদ্রিসা বলেন, ‘যা ঘটেছে, তা এক কথায় বর্ণনাতীত। আমার চোখের সামনেই আমার মেয়েদের অপরহণ করে নিয়ে গেছে তারা।’

ওমর ইদ্রিস জানান, তার স্কুলে ৩ বছর বয়স থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ভর্তি করা হয়। তিনি আরও জানান, অপহরণের পর তাদের নিয়ে স্কুল ত্যাগের আগে ৩ থেকে ৪ বছর বয়সী ১১ শিশুকে ছেড়ে দিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। কারণ, তারা এতই ছোট যে ঠিকমতো হাঁটতেও শেখেনি।

নাইজেরিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের সক্রিয়তা গত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশটির গ্রাম ও উপশহর এলাকায় লুটপাট, ডাকতি, গবাদিপশু চুরি ও মানুষদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করে থাকে এই গুলো। নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ নাইজারে এদের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি।

নাইজেরিয়ায় সরকারি সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাইজারসহ অন্যান্য প্রদেশে সাত শতাধিক শিশু ও শিক্ষার্থীকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করেছে দুষ্কৃতিকারীরা।

নাইজারের ডেপুটি গভর্নর আল আহমেদ মোহাম্মেদ কেতসো জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তবে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই। তিনি আরও বলেন, অপরাধীদের মোকাবিলা করতে নিরাপত্তা বাহিনীর আরও অস্ত্রশস্ত্র প্রয়োজন।

অপহৃত শিশুদের উদ্ধারের বিষয়ে মোহাম্মেদ কেতসো বলেন, ‘অপহৃতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’

এসএমডব্লিউ