করোনা পরবর্তী জটিলতা, ভিড় বাড়ছে দিল্লির হাসপাতালগুলোতে
করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে পারলেও এবার নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে দিল্লিতে। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের জেলার হাসপাতালগুলোতে কোভিড পরবর্তী জটিলতায় আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বাড়ছে।
নয়াদিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর শারিরীক সমস্যায় ভূগছেন- এমন রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। বর্তমানে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী তাদের দেখতে হচ্ছে, যারা করোনা পরবর্তী জটিলতায় পড়েছেন।
বিজ্ঞাপন
তারা আরও জানিয়েছেন, করোনার প্রথম তরঙ্গের সময়ও এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন তারা, তবে সে সময় অধিকাংশ রোগীর শুধু মাথা ব্যথা বা ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা যেতো; কিন্তু দেশটিতে চলমান করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে অনেক রোগীকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
নয়াদিল্লির ম্যাক্স হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব রেসপিরেটরি মেডিসিনের প্রধান বিবেক নাঙ্গিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের এই মুহূর্তে যতসংখ্যক রোগী আছেন, তাদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই করোনা পরবর্তী জটিলতার কারণে ভর্তি হয়েছেন। অনেকেরই ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, আবার কোনো কোনো রোগীকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
‘শুধু বয়স্করাই নন, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর মধ্যবয়সী, তরুণ-তরুণী এমনকি শিশুরাও শারীরিক জটিলতা নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর প্রথমে জ্বর হচ্ছে, তারপর বাকি সমস্যাগুলো দেখা দিচ্ছে।’
কোনো কোনো রোগীর শারীরিক অবস্থা এমন জটিল অবস্থায় পৌঁছেছে যে তাদেরকে ফের আইসিইউতে ভর্তি করতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিবেক নাঙ্গিয়া।
গত মার্চ থেকে ভারতে শুরু হওয়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে কয়েকটি রাজ্য সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় পৌঁছেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম দিল্লি। গত এপ্রিল থেকে মে মাসের মাঝমাঝি পর্যন্ত সেখানে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তে সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারেরও ওপরে।
দিল্লির রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তখন জানিয়েছিল, রাজ্যে করোনা টেস্ট করাতে আসা মানুষদের প্রতি তিনজনে একজন করোনা ‘পজিটিভ’ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন।
অবশ্য করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে দিল্লির রাজ্য সরকার। বর্তমানে রাজধানী নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের জেলাগুলোতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে ৫০০ তে।
তবে সংক্রমণের উচ্চহার কেটে যাওয়ার পর থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে করোনা পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতা। সম্প্রতি ভারতে ব্যাপক আকারে যে রোগের বিস্তার দেখা যাচ্ছে, সেই মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে দিল্লিতে।
এসএমডব্লিউ