ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে শিশুদের ওপর করোনা টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হচ্ছে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এইমস)-এ সোমবার (৭ জুন) থেকে এই ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। অবশ্য দেশটির বিহারের পাটনা এইমসে কিছুদিন আগেই এই ট্রায়াল শুরু হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময় ২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু ও কিশোরদের শরীরে কোভ্যাক্সিনের টিকা প্রয়োগ করা হবে। এর মাধ্যমে ওই টিকা শিশুদের জন্য উপযোগী কি না, সেটাই মূলত খতিয়ে দেখা হবে। গত ১৩ মে শিশুদের ওপর করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বিষয়টি অনুমোদন করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

এছাড়া বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরকে দ্রুত টিকার আওতায় আনা জরুরি। আর সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে ভারত।

ভারতে এখন তিনটি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন ও স্পুটনিক-৫। যদিও এগুলো শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শিশুদের ওপর এই তিনটি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার ছাড়পত্র মেলেনি।

ভারত সরকারের নীতি নির্ধারণী থিংক-ট্যাংক নীতি আয়োগের সিনিয়র সদস্য ড. ভি কে পাল জানিয়েছেন, গত ১৩ মে কেন্দ্রীয় সরকার এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয়। গত মাসে ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনকে সীমিত ভাবে অল্পবয়সীদের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে। চীন ছাড়পত্র দিয়েছে করোনাভ্য়াককে। এটি চীনা সংস্থা সিনোভ্যাকের তৈরি ভ্যাকসিন। ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ওপর প্রয়োগ করা হবে এই ভ্যাকসিন। তবে বেশিরভাগ দেশে এখনও পর্যন্ত শিশুদের জন্য কোনো ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

তবে শিশুদের করোনা থেকে দূরে রাখতে বিশেষজ্ঞরা একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞের মতে, কোভিড-১৯ এখনও সেভাবে বাচ্চাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও একেবারে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না।

ভবিষ্যতে শিশুরা যাতে নিরাপদে থাকে, তার জন্য এখন থেকেই শারীরিক কসরত, শিশুদের সঙ্গে খেলা, জাংক ফুড এড়িয়ে চলা, ভালো ঘুম, সবসময় মাস্কের ব্যবহার, এবং সঠিক সময়ে টিকা দেওয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চার ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কিনা সেদিকেও বাবা-মাকে খেয়াল রাখার পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

টিএম