কথায় বলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) যুক্তরাজ্যে সেই ঘটনাই ঘটল। ১৯৪১ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। স্বাক্ষর করলেন আটলান্টিক চার্টার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪১ সালে যা প্রথম স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট।

এর আগে বৃহস্পতিবারই যুক্তরাজ্যে পৌঁছান জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে এটাই তার প্রথম বিদেশ সফর। শুক্রবার থেকে যুক্তরাজ্যে শুরু হচ্ছে জি-৭ সম্মেলন। তার আগে বৃহস্পতিবারই জনসন এবং বাইডেন প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক করেন কর্নওয়ালে। বৈঠক শেষে দুই নেতাই জানিয়েছেন, আলোনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আটলান্টিক চার্টার স্বাক্ষর করার পাশাপাশি রাশিয়া, চীন নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে জি-৭ সম্মেলনে আলোচনা করতে চান প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ট্রান্স আটলান্টিক পলিসি, রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সমঝোতা এবং চীন নিয়ে ঐক্যমত্য। এছাড়াও করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক ভারসাম্য নিয়েও জি-৭ সম্মেলনে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

বস্তুত, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে এবারের জি-৭ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এর মধ্যে ইউরোপের দেশগুলোর পাশাপাশি ভারতও আছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বে গণতন্ত্র কী ভাবে সুরক্ষিত থাকবে, গণতান্ত্রিক ভাবে কী ভাবে মানুষকে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া যাবে, এই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বরিস জনসন এবং জো বাইডেন যে আটলান্টিক চার্টার স্বাক্ষর করেছেন, সেখানে অবশ্য রাশিয়া এবং চীনের প্রতি তাদের মনোভাব নিয়ে নীতি তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই ঠান্ডা-গরম সম্পর্ক চলে আসছে। এছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একনায়ক মনোভাবও পছন্দ নয় যুক্তরাষ্ট্রের। বাইডেন চাইছেন, ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে সমঝোতায় এসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি গড়ে তুলতে। চীনের ক্ষেত্রেও একই নীতি অবলম্বন করতে চাচ্ছেন তিনি।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাশিয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যমত্য সম্ভব হলেও, চীনের বিরুদ্ধে তা গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। জার্মানি এবং ফ্রান্স চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে সায় দিয়েছে। বাজারের কথা মাথায় রেখে তারা এমন কিছু করবে না, যাতে চীন বেঁকে বসে।

জি-৭ সম্মেলনের পর ন্যাটো এবং ইইউ-ইউএস সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। তারই মধ্যে আগামী বুধবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে পারেন জো বাইডেন। বৈঠক হতে পারে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গেও।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

টিএম