করোনা মহামারির জেরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের আগমন ও নিজ দেশের নাগরিকদের সেসব দেশে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল জার্মানি। সম্প্রতি সেই সেই আদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার।

তার অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই থেকে নিষেধজ্ঞার আওতায় পড়া অধিকাংশ দেশের ওপর থেকে এই আদেশ প্রত্যাহার করা হবে। শুধু যে দেশগুলোতে এখনো করোনা পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে, সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

শুক্রবার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস ফ্রান্সের বার্তাসংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানিয়েছেন। দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাওয়া এবং বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

এএফপিকে হাইকো মাস বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি আমরা আশা করছি, আসন্ন গ্রীষ্মেই আশা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে জার্মানি। দেশের বেশিরভাগ এলাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিনকে দিন কমছে এবং প্রতিদিনই টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।’

জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সে দেশে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০-২০০ জন এবং প্রতিদিনই এই সংখ্যা কমছে। শুক্রবারে এই সংখ্যা ছিল ১৯ জন। দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেনম জার্মানি এখন আর ‘রিস্ক জোন’ বা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নেই।

অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ইতোমধ্যে করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ।

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মাসের পর মাস ধরে লকডাউনে থাকার পর আমরা সবাই এখন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে চাইছি। এর অংশ হিসেবেই এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তবে যেসব দেশে এখনও করোনা সংক্রমণের উচ্চহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেই দেশগুলোতে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকো মাস। সেই অনুযায়ী, ব্রিটেন, ভারতসহ কয়েকটি দেশ এখনও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে।

তবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে কোনো প্রকার উদাসীনতাকে সরকার প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এএফপিকে তিনি বলেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া মানে এই নয় যে আমরা উদাসীনতাকে স্বাগত জানাচ্ছি। ২০২১ সালের গ্রীষ্মের ছুটির দিনগুলোতে যেন করোনা সংক্রমণ না বাড়ে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’

সম্প্রতি লকডাউন শিথিল করা হয়েছে জার্মানিতে। দোকান, শপিংমল, রেস্তোঁরাসহ জনসমাগমের অনেক স্থান খুলে দেওয়া হয়েছে।

তবে এর পাশাপাশি বাড়ির বাইরে বের হলে নিয়মিত মাস্ক পরা, স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়মিত করোনা টেস্ট করা এবং জরুরি সেবাখাত নয়, এমন দফতরের কর্মীদের বাড়িতে অফিস করার ব্যাপারে কড়াকড়িও অব্যাহত আছে দেশটিতে।

সূত্র: এএফপি

এসএমডব্লিউ