বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলোর জোট জি-৭ এর নেতাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে চীন বলেছে, অল্প কয়েকটি দেশ পুরো বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবে, এমন ধারণা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটি দেশ পুরো বিশ্বকে শাসন করতে পারে না। বিশ্বব্যাপী চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে পশ্চিমা দেশগুলোর পরিকল্পনার জবাবে রোববার (১৩ জুন) একথা জানায় দেশটি।

চীনের লন্ডন দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানান, ‘অল্প কয়েকটি দেশ স্বৈরতান্ত্রিকভাবে পুরো বিশ্বের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমরা সবসময় বিশ্বাস করি যে, দেশ ছোট হোক বা বড়, শক্তিশালী হোক বা দুর্বল হোক; সবাই সমান। আর তাই বৈশ্বিক কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সকল দেশের উচিত সিদ্ধান্ত নেওয়া।’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হয় মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মাধ্যমে। এরপরই বৈশ্বিক পরাশক্তি হিসেবে চীনের পুনর্জাগরণ বর্তমান বিশ্বের ভূ-রাজনীতিতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

গত ৪০ বছরেরও বেশি সময়ে অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে দর্শনীয় উন্নতি করেছে চীন। আর তাই উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে ব্রিটেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৈঠকে বসে জি-৭ জোটের রাষ্ট্র নেতারা।

জি-৭ বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ শনিবার আলাপ-আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল চীন এবং বিশ্বে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার উপায়। হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, অবকাঠামো এবং অন্যান্য কারিগরি সাহায্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে চীন যেভাবে তাদের প্রভাব বলয় বাড়াচ্ছে তার মোকাবিলায় বিকল্প অভিন্ন একটি কৌশল নিতে নতুন একটি পশ্চিমা জোট তৈরির প্রস্তাব দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গত তিন দশকে চীন তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) আওতায় বিশ্বের শতাধিক দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। যা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটনের ভয়, গত কয়েকশো বছর ধরে উন্নয়নশীল বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে, চীনের এই কর্মকাণ্ডের ফলে তা হুমকিতে পড়ছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার চীন ইস্যুতে হওয়া জি-৭ এর ওই বৈঠকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে সদস্য দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

চীন অবশ্য বরাবরই পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করে আসছে।

সূত্র: রয়টার্স

টিএম