করোনার দ্বিতীয় দফার প্রকোপে ভারতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশটির জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আগামীকাল সোমবার থেকে অনেক বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

ভারতে এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ শুরু হয়। ওই সময় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পেরোয় চার লাখ। ওই সময় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দিল্লি। ভেঙে পড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। দেখা দেয় অক্সিজেনের মারাত্মক সংকট। অসংখ্য মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারান।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১৯ এপ্রিল থেকে দিল্লিতে চলছে লকডাউন। জারি বিধিনিষেধ শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। 
আগামীকাল সোমবার থেকে তা কার্যকর হবে। মূলত করোনা সংক্রমণ কমার কারণেই দিল্লির সরকার ‘আনলক প্রক্রিয়া’ শুরু হয়েছে। 

কেজরিওয়াল ঘোষণা দিয়েছেন, সোমবার থেকে দিল্লির সব বাজার ও শপিং মল খোলা যাবে। অর্ধেক ক্রেতা ও গ্রাহক নিয়ে চালু করা যাবে রেস্তোরাঁ। তবে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। এদিকে অনুমতি থাকলেও শপিং মল খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। 

এভাবে আগামী এক সপ্তাহ এভাবে চলবে। দেখা হবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে নাকি অবনতি ঘটছে। যদি দেখা যায় এতে করে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে, তবে আবারও আগের মতো কঠোর লকডাউন জারি করা হবে বলে জানান অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

এর আগে গত সপ্তাহে দিল্লি মেট্রো চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। সরকারি-বেসরকারি অফিস, দোকান (আংশিক) ও বাজার (আংশিক) খোলারও অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ই-কমার্স কর্মকাণ্ডের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি এই সময়ে।

এদিকে গত সপ্তাহে পোলিং বুথে টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দিল্লিতে বসবাসকারী ৪৫ বছরের বেশি বয়সী সবাই টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালুর ঘোষণা করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু দিল্লি নয় গোটা ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমছে। গত ২ এপ্রিলের পর গতদিন দেশটিতে সবচেয়ে কম সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে মৃত্যুও কমেছে। তবে মৃত্যু তেমন একটা কমেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে তিন সহস্রাধিক মানুষের।  

ভারতে টানা পাঁচ দিন ৫ শতাংশের নিচে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের চার দিন শনাক্তের হার ছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ ও ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ।

এএস