জি-৭ সম্মেলন শেষে প্রথা অনুযায়ী কমিউনিক নামে যে নথি যুক্তরাজ্য প্রকাশ করেছে এতে চীনের ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছে। জি-৭ কমিউনিকে এ ধরনের ঘটনা বিরল। বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রসঙ্গ তুলে ও হংকং ও জিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রসঙ্গে মূলত এ সমালোচনা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমর্থন রয়েছে এ কমিউনিকে।  

এ নথিতে বলা হয়েছে, আমরা আমাদের মূল্যবোধগুলো প্রচার করতে থাকবো। এর মধ্যে মানবাধিকার এবং মানুষের স্বাধীনতার বিষয়টিকে সম্মান দেখানোর জন্য চীনের প্রতি আহ্বান অব্যাহত থাকবে। এখানে বিশেষ করে জিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে সিনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণায় হংকংয়ের স্বাধীনতার প্রসঙ্গও টানা হয়েছে।  নথিতে আরও বলা হয়েছে, কৃষি, সোলার ও তৈরি পোশাক খাতসহ গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনে জোরপূর্বক শ্রমের বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।   

তাইওয়ানের প্রসঙ্গও এসেছে এ নথিতে। পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে বিদ্যমান পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এ নথিতে আরও বলা হয়েছে, এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াতে একপাক্ষিক কোনো পদক্ষেপের পক্ষে আমরা নই।  

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জো বাইডেন বলেন, জি-৭ এর শেষ সম্মেলনের কমিউনিকে চীনের বিষয়ে কোনো উল্লেখ ছিল না, কিন্তু এবার আছে। হংকং ও জিনিজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে সম্মত হয়েছে জি-৭। একইসঙ্গে চীনের অপেশাদার নীতি, যেগুলোর কারণে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা ব্যাহত হচ্ছে সেগুলোর বিষয়েও সাধারণ কৌশল নিতে সম্মত হয়েছে জি-৭। সোলার, কৃষি ও তৈরি পোশাক খাতে জোরপূর্বক শ্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও সম্মত হয়েছে জি-৭। তিনি আরও বলেন, এ নথিতে চীনের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলা হয়েছে, এ জন্য তিনি সন্তুষ্ট।  

নথিতে চীনের বিষয়ে এত উল্লেখ কিভাবে করা হলো- এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি বাঁচাতে যা করণীয় ছিল আমি তার একটি পরিকল্পনা দিয়েছি, এছাড়া উদীয়মান অন্যান্য অর্থনীতিগুলো যেন শক্ত হতে পারে এবং কোনো দেশ যেন তাদের  জিম্মি করে রাখতে না পারে, আমি সেটা দেখানোর চেষ্টা করেছি। 

বাইডেন আরও বলেন, আমরা চীনের সঙ্গে কোনো প্রতিযোগিতা করছি না, বরং আমরা বিশ্বের স্বৈরশাসকগুলোর সাথে একটি প্রতিযোগিতায় আছি। আমি কোনো সংঘাত চাই না। যেখানে পারবো আমরা সেখানে সহযোগিতা করবো, কিন্তু যেখানে প্রয়োজন সেখানে আমরা ব্যবস্থাও নেবো। আন্তর্জাতিক অঙ্গন ও মানবাধিকার মানদণ্ডে চীনকে আরও দায়িত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, বিশ্বের কাছে স্বচ্ছতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

কোভিডের উৎপত্তির বিষয়টিও জি-৭ এ তোলা হয়েছে বলে জানান বাইডেন। 

জি-৭ এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হল গ্রুপ অব০ সেভেন, বা সাতটি দেশের দল। বিশ্বেররউন্নত অর্থনীতির সাতটি বড় দেশ ও একটি সংস্থা নিয়ে এই জোট গঠিত। জোটের সদস্য দেশ হলো- কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই জোটের একটি অংশ।

এনএফ