ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ডেল্টা প্রজাতি রূপ বদলে ফেলেছে। করোনার এই ধরনকে ‘ডেল্টা প্লাস’ বা ‘এওয়াই.১’ হিসেবে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেছেন, পরিবর্তিত এই রূপ শরীরের ইমিউনিটি ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম। তবে এখনই এটি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।

করোনার অতিসংক্রামক প্রজাতি বি.১.৬১৭ এর পরিবর্তিত ধরন হচ্ছে ডেল্টা প্লাস। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেপথ্যে ডেল্টা ধরনের ভূমিকা রয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন। সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে রূপান্তর ঘটিয়ে ফেলা এই প্রজাতিকে কে৪১৭এন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ভাইরাসকে মানব দেহের কোষে প্রবেশ এবং সংক্রমিত করতে সহায়তা করে স্পাইক প্রোটিন। ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে রূপ বদলে  ডেল্টা থেকে নতুন রূপ নেওয়া ডেল্টা প্লাস মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে।

মঙ্গলবার ভারত সরকার বলেছে, চলতি বছরের মার্চ থেকেই ডেল্টা প্লাস প্রজাতিটি পাওয়া যাচ্ছিল। তবে এই মুহূর্তে ডেল্টা প্লাস প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন ভারত সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ নীতি আয়োগের সদস্য ভিনোদ কে পাল। 

তিনি বলেন, ডেল্টা প্লাস প্রজাতির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে এবং বৈশ্বিক ডেটা ব্যবস্থাপনায় ইতোমধ্যে ডেল্টার পরিবর্তিত ধরনটির তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে।

পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের মতে, কে৪১৭এনের মিউটেশনের সঙ্গে ৬৩বি.১.৬১৭.২ জিনোম শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে ৩৬ জন ডেল্টা প্লাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিনের বেশি সময় পর একজনের শরীরে ডেল্টা প্লাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে রোগীদের প্রায় ৬ শতাংশই এই ধরনে আক্রান্ত।

দিল্লির সিএসআইআর-ইনস্টিটিউট অব জিনোমিকস অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজির (আইজিআইবি) পরিচালক অনুরাগ আগ্রাওয়াল বলেছেন, নতুন প্রজাতিতে আক্রান্ত এখনও কম এবং এর তীব্রতা ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। যে কারণে এটি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। 

তিনি বলেছেন, ডেল্টার পরিবর্তিত ধরনটি শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে কি-না তা জানার জন্য ভ্যাকসিন ডোজ সম্পন্ন করা বেশ কয়েকজনের রক্তের প্লাজমা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

সিএসআইআর-আইজিআইবির আরেক বিজ্ঞানী বিনোদ কারিয়া বলেছেন, কে৪১৭এন প্রজাতিটি বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার অন্যান্য দেশে অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ভ্রমণের ইতিহাস তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে এটি কত বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে সেব্যাপারে অনুমান করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএস