মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় গেরিলাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর দেশটির একটি গ্রাম পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২ জন। এ ঘটনার জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করেছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (১৫ জুন) দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় কিন মা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’কে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, মঙ্গলবার কিন মা গ্রামে আক্রমণ করে সেনাবাহিনী এবং গ্রামের ২৪০টি বাড়ির মধ্যে ২০০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় তারা। সরকার বিরোধী স্থানীয় এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী গ্রামটিতে হামলা চালায় বলেও জানান তারা।

এদিকে সেনাবাহিনীর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ড্যান শুগ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সেনা সদস্যরা মাগওয়ের একটি পুরো গ্রাম পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। এতে সেখানকার বৃদ্ধ বাসিন্দারাও নিহত হয়েছেন। সামরিক বাহিনী যে ভয়ঙ্কর অপরাধ করে চলেছে, এই ঘটনার মাধ্যমে তা আবারও প্রদর্শিত হলো এবং এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে- মিয়ানমারের মানুষের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই।’

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন অবশ্য এই ঘটনার জন্য ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করেছে।

কিন মা গ্রামের এক বাসিন্দা বিবিসি’কে জানান, পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামক একটি সশস্ত্র গেরিলা সংগঠনের যোদ্ধাদের সঙ্গে মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এরপরই গ্রামে ঢুকে তাণ্ডব চালায় সেনা সদস্যরা।

তিনি আরও জানান, সর্বশেষ সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ ধরনের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের জন্ম হয়েছে। ঘরোয়াভাবে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র দিয়েই তারা জান্তা সরকারের পুলিশ ও সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

অন্য এক বাসিন্দা বলেন, গ্রামে ঢুকে সেনাবাহিনী গুলি চালানো ও বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়াসহ তাণ্ডব শুরু করলে প্রাণ বাঁচাতে তিনি ও আশপাশের লোকজন পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যান। কিন্তু দু’জন বৃদ্ধ লোক পালাতে পারেননি। তারা ঘরের ভেতরেই আগুনে পুড়ে মারা যান। সেনাবাহিনীর হামলার পর থেকে আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি

টিএম