মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির ৭৬ তম জন্মদিনে চুলে ফুল গুঁজে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার সমর্থকরা। শনিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনসহ কয়েকটি শহরে হয়েছে এমন মিছিল।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মিয়ানমারের সামরিক শাসনের অবসান ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে চুলে ফুল গুঁজতেন অং সান সু চি। তার ভক্ত-অনুসারী ও প্রতিবাদকারীরাও শনিবারের বিক্ষোভ মিছিলে এই ব্যাপারটি অনুসরণ করেছেন।

থেট সোয়ে উইন নামের একজন বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিনিধির। সু চি ক্ষমতায় থাকাকালে মিয়ানমারের জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকারের পক্ষে আন্দোলনের অভিযোগে কয়েকদিন কারাবাস করতে হয়েছিল তাকে।

কিন্তু তিনিও শনিবার চুলে ফুল গুঁজে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন। এ বিষয়ে রটয়টার্সকে থেট সোয়ে উইন বলেন, ‘আজকের মিছিলে আসার কারণ, জান্তা সু চির রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত অধিকার হরণ করেছে। আমি সু চিসহ মিয়ানমারের সব মানুষের অধিকার চাই।’

সু চির জন্মদিন ও তার অনুসারী-সমর্থকদের মিছিলের প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং এতে নেতৃত্ব দেন।

দেশের ক্ষমতা দখলের পরই গৃহবন্দি করা হয় সু চি কে। গ্রেফতার করা হয় তার রাজনৈতক দল এনএলডি (ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি)-এর বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থককে।

এদিকে অভুত্থানের পরই বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনগণ। তাদের বিক্ষোভ দমনে কঠোর ভূমিকা নিয়েছে সামরিক বাহিনীও। দেশটির কারাবন্দিদের আইনী সহায়তা দানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, চলমান বিক্ষোভে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে মারা গেছেন ৮৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী এবং গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ৫ হাজারেরও অধিক।

এদিকে, ক্ষমতায় থাকাকালে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচার, ঘুষ গ্রহণ, অবৈধ ওয়াকিটকি রাখাসহ মোট ৫  অভিযোগে গত ১৪ জুন থেকে সু চির বিচার শুরু হয়েছে নেইপিদোর একটি আদালতে। দেশটির আইন ও বিচারবিভাগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জান্তার উত্থাপিত অভিযোগুলোর মধ্যে অন্তত ২ টি অভিযোগ বেশ স্পর্ষকাতর।  এগুলো সত্য বলে প্রমাণিত হলে বাকি জীবন কারাগারেই কাটাতে হবে সু চিকে।

গত সোমবার এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো শুনানি হয়েছে আদালতে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী সোমবার।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ