ভারত সফরে গিয়ে গত সপ্তাহে আফগান দূতাবাসে সংবাদ সম্মেলন করেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তবে সেখানে কোনো নারী সাংবাদিককে রাখেননি আফগান কর্মকর্তারা।

বিষয়টি জানাজানির পর ভারতে সমালোচনা তৈরি হয়। এরপর দেশটির দূতাবাসে গত রোববার আরেকটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে নারীদের ডাকা হয়। আর সেখানেই আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনেকটা ‘শিক্ষা’ দিতে নারী সাংবাদিকদের তার ঠিক সামনে বসান পুরুষ সাংবাদিকরা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সেখানে নারীরা আফগান মন্ত্রীকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। ভারতীয় প্রভাবশালী সাংবাদিক স্মিতা শর্মা সরাসরি মুত্তাকিকে প্রশ্ন করেন, “আফগানিস্তানে কেন আপনারা (নারীদের সাথে) এমনটি করছেন? কখন তাদের স্কুলে যেতে এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে দেওয়া হবে?”

নারী সাংবাদিকদের ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করায় ‘ভারত প্রেস ক্লাব’-সহ অন্যান্য সংগঠন তীব্র নিন্দা জানায়। এরপর বাধ্য হয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়। তারা জানায়, নারীদের ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করার সঙ্গে ভারত সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গেছে, নারী সাংবাদিকরা একদম সামনের সারিতে চেয়ারে বসে আছেন। আর পুরুষরা তাদের পেছনে বসেছেন। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছেন।

সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর কূটনীতিক প্রতিবেদক সুহাসিনী হায়দার সিএনএনকে বলেছেন, “আমাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া অবশ্যই ছিল ক্ষুব্ধ। কিন্তু সত্যি আমরা যেটি চেয়েছিলাম ভারত সরকার অন্তত এটির নিন্দা জানাবে এবং এ নিয়ে কিছু বলবে।”

“এছাড়া যে সরকারকে ভারত স্বীকৃতি দেয় না তাদের প্রতিনিধি ভারতে এসে নারীদের ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করবে, এটি ছিল অভূতপূর্ব।”— যোগ করেন সুহাসিনী।

নারীদের না রাখা নিয়ে যা বলেছেন আফগান মন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেছেন, ‘টেকনিক্যাল’ কারণে গত শুক্রবার তার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের ডাকা হয়নি।

তিনি বলেন, “সম্মেলনটি খুবই কম সময়ে আয়োজন করা হয়। সাংবাদিকদের ছোট একটি তালিকা ছিল সেখান থেকে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এটি ছিল একটি টেকনিক্যাল বিষয়, অন্য কিছু নয়। আমাদের সহকর্মীরা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিলেন, এর বেশি কিছু নয়।”

সূত্র: সিএনএন

এমটিআই