ভাইরাল এক ভিডিওতে একটি বন্য হাতিকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দৃশ্য দেখা যাওয়ার পর প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী কলম্বো থেকে দূরের এক শহর থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার পুলিশ বলেছে, জীবন্ত হাতি পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় জেলা অনুরাধাপুরা থেকে ৪২ থেকে ৫০ বছর বয়সী তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হাতি পুড়িয়ে হত্যার এই ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের আগামী ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

দেশটিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা জানান, আগুন দেওয়ার আগে হাতিটিকে গুলি করে আহত করা হয়েছিল এবং পরে পশু চিকিৎসকদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

দেশটির বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা বলেছেন, আগুন দেওয়ার আগে হাতিটিকে গুলি করে আহত করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে পশু চিকিৎসকদের হাতিটিকে বাঁচানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

শ্রীলঙ্কায় হাতিকে পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং এই প্রাণীর সুরক্ষা আইনিভাবে নিশ্চিতের বিধান রয়েছে। তারপরও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কৃষক ও বাসিন্দারা কখনো কখনো ফসল নষ্ট করায় বন্য হাতির ওপর আক্রমণ চালান।

দেশটির আইনে হাতি সুরক্ষিত এবং হাতি হত্যা করা হলে শিকারিদের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে দেশটিতে ১৯৭৬ সালের পর থেকে হাতি হত্যার অভিযোগে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। বরং মৃত্যুদণ্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।

দেশটিতে মানুষ ও হাতির মাঝে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত পাঁচ বছরের প্রতিবছরে গড়ে প্রায় ৪০০টি হাতি এবং ২০০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

শ্রীলঙ্কায় আনুমানিক ৭ হাজার বন্য হাতি রয়েছে। বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে গুরুত্বের কারণে হাতিকে আংশিকভাবে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সূত্র: এএফপি।

এসএস