বিশ্বের দীর্ঘতম রাস্তা : ৩০ হাজার কিলোমিটার পথ, নেই কোনো ইউ-টার্ন!
কল্পনা করুন এমন একটি রাস্তার কথা, যেখানে প্রতিদিন ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেও পুরোটা শেষ করতে আপনার দুই মাসের বেশি সময় লেগে যাবে। এই বিশাল পথজুড়ে আপনাকে একবারও ইউ-টার্ন নিতে হবে না। এটি কোনো কাল্পনিক পথ নয়, বরং বাস্তবের প্যান-আমেরিকান হাইওয়ে।
টানা ১৪টি দেশের মধ্য দিয়ে বিস্তৃত এই সড়কটিকে বিশ্বের দীর্ঘতম মোটরযান চলাচলযোগ্য রাস্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস।
বিজ্ঞাপন
কোথা থেকে শুরু আর কোথায় শেষ?
প্যান-আমেরিকান হাইওয়ে উত্তর আমেরিকার আলাস্কার ‘প্রুডো বে’ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটার লম্বা এই মহাসড়কটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থল হিসেবে কাজ করে।
বিজ্ঞাপন
যেসব দেশের মধ্য দিয়ে এই পথ গিয়েছে : এই মহাসড়কটি মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, এল সালভাদর, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, কোস্টারিকা এবং পানামা হয়ে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রবেশ করেছে। এরপর এটি কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু, চিলি ও আর্জেন্টিনার ওপর দিয়ে চলে গেছে। যাত্রী ও পর্যটকদের সুবিধার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অংশে এই রুটের একাধিক বিকল্প পথও রয়েছে।
পাড়ি দিতে কত সময় লাগে?
সাধারণত এই বিশাল পথটি অতিক্রম করতে একজন ভ্রমণকারীর প্রায় ৬০ দিন বা দুই মাস সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে যানবাহনের গতি এবং যাত্রাপথে বিরতির ওপর। যেমন, কার্লোস সান্তামারিয়া নামের এক পর্যটকের এই পুরো পথটি শেষ করতে ১১৭ দিন সময় লেগেছিল।
বৈচিত্র্যময় পরিবেশ ও ভাষা
এই দীর্ঘ যাত্রাপথে আপনি কখনও ঘন রেইনফরেস্ট, আবার কখনও ধূ ধূ মরুভূমির মতো বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির দেখা পাবেন। এই মহাসড়কের একটি বড় অংশ স্প্যানিশভাষী দেশগুলোর ওপর দিয়ে গিয়েছে। তাই এই পথে রোমাঞ্চকর অভিযানে বের হওয়ার আগে সামান্য স্প্যানিশ ভাষা শিখে নেওয়া পর্যটকদের জন্য বেশ সহায়ক হয়।
ইতিহাসের পাতায় প্যান-আমেরিকান হাইওয়ে
এই মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা শুরু হয় ১৯২০-এর দশকের গোড়ার দিকে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটন বাড়ানোর লক্ষ্যেই এটি তৈরির চিন্তা করা হয়েছিল। ১৯৩৭ সালে ১৪টি দেশ এই রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর ১৯৬০ সালে এটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়।
এমএন