অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ সহযোগিতা না করায় আফ্রিকার দেশ ডিআর কঙ্গোর নাগরিকদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। শনিবার স্থানীয় সময় গভীর রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিধি-নিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

বিবৃতিতে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ডিআর কঙ্গোর তৎপরতার দ্রুত উন্নতি না ঘটলে ভিসা সম্পূর্ণ বন্ধসহ আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিধিনিষেধের ফলে ডিআর কঙ্গোর ভিআইপি ও নীতিনির্ধারকরা যুক্তরাজ্যের ভিসার বিশেষ সুবিধা হারাবেন। পাশাপাশি, ডিআর কঙ্গোর সব নাগরিকের জন্য দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়ার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।

এর আগে, গত নভেম্বরে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত নিতে সম্মত না হলে ডিআর কঙ্গো, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়ার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসী ও অপরাধীকে ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা বারবার বাধাগ্রস্ত করেছে ওই তিন আফ্রিকান দেশ।

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশগুলোর ফেরত প্রক্রিয়া একেবারে অগ্রহণযোগ্য, দুর্বল এবং বাধাসৃষ্টিকারী। তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রক্রিয়াকরণে অস্বীকৃতি জানাতো এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজের কাগজে নিজেকেই সই করতে বলতো; যার ফলে কার্যত তারা নিজেদের বহিষ্কার প্রক্রিয়া আটকে দেওয়ার সুযোগ পেতো।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়া তাদের প্রক্রিয়া ‘‘উন্নত করতে’’ এবং ‘‘অবৈধ অভিবাসী ও অপরাধীদের’’ ফেরত নিতে সম্মত হওয়ায় তাদের ওপর এ ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না।

ডিআর কঙ্গোর পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা যোগাযোগ করা হলেও মাহমুদ সতর্ক করে বলেছেন, মধ্য আফ্রিকার এই দেশটিকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, যদি তাদের কোনও নাগরিকের এখানে থাকার অধিকার না থাকে, তাহলে তাদের অবশ্যই তাকে ফেরত নিতে হবে।

শাবানা মাহমুদ বলেছেন, ‘‘আমি অ্যাঙ্গোলা ও নামিবিয়াকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এখন ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর সঠিক কাজ করার সময়। আপনার নাগরিকদের ফেরত নিন, নাহলে আমাদের দেশে প্রবেশের বিশেষাধিকার হারাবেন।’’

নভেম্বরে ঘোষিত আশ্রয়নীতি কঠোর করার সংস্কারপ্যাকেজের অংশ হিসেবেই এই ভিসা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেন। গত কয়েক বছরে ব্রিটেনে অভিবাসন ইস্যু তীব্রভাবে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়টি কট্টর ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে দলের প্রতি সমর্থন বাড়িয়েছে; যারা আগামী মে মাসে অনুষ্ঠেয় স্থানীয় নির্বাচনের আগে জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস