কানাডার নৌবাহিনী রয়্যাল কানাডিয়ান নেভিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ইরান। গত বছর ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কানাডার তালিকাভুক্তির প্রতিশোধে মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই পদক্ষেপ নিয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীকে আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতির পরিপন্থী হিসেবে অটোয়ার সন্ত্রাসী সংগঠনের ঘোষণার প্রতিশোধে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‌‌প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূলনীতির ভিত্তিতে রয়্যাল ক্যানাডিয়ান নেভিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে শনাক্ত এবং ঘোষণা করা হলো। তবে কানাডার এই নৌবাহিনীকে ইরানের সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার ফলে কি ধরনের প্রভাব অথবা পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হবে, সেই বিষয়ে বিবৃতিতে স্পষ্ট করে কোনও তথ্য জানানো হয়নি।

গত বছরের ১৯ জুন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেয় কানাডা। এর ফলে ইরানের এই বাহিনীর সদস্যদের কানাডায় প্রবেশ এবং আইআরজিসির কোনও সদস্য কিংবা সংগঠনটির সঙ্গে কানাডীয়দের লেনদেন নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া সংগঠনটির কিংবা তার সদস্যদের কানাডায় থাকা সব সম্পত্তিও জব্দ করা হয়।

কানাডা অভিযোগ করে বলেছে, ইরানের ভেতরে ও বাইরে মানবাধিকার উপেক্ষা এবং আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা অস্থিতিশীল করার প্রবণতা রয়েছে আইআরজিসির। অটোয়ার আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার অন্যতম কারণ ছিল ফ্লাইট পিএস৭৫২ দুর্ঘটনা।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে তেহরান থেকে উড্ডয়নের ঠিক পরই বিমানটিতে হামলা হয়। এতে বিমানের ১৭৬ জন যাত্রী ও ক্রু নিহত হন; তাদের মধ্যে ৮৫ জন কানাডীয় নাগরিক অথবা স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। আইআরজিসি বিমানটি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর কথা স্বীকার করলেও ভুলে তা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল বলে জানায়।

তেহরানের সঙ্গে ২০১২ সালে অটোয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে ইরানকে ‘‘বিশ্ব শান্তির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি’’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। ইরানের চিরবৈরী প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালের এপ্রিলে আইআরজিসিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করে। এছাড়া গত মাসে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া অভিযোগ করে, সংগঠনটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বিভিন্ন সময়ে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

সূত্র: এএফপি।

এসএস