করোনার অতিসংক্রামক নতুন নতুন ধরনগুলোর প্রকোপ দেখা দিয়েছে আমিরাতে। আর এতে করে দেশটিতে আক্রান্তের সঙ্গে প্রাণহানিও বাড়তে শুরু করেছে। আমিরাতের জাতীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার এমন তথ্য জানিয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

প্রায় ৯০ লাখ জনসংখ্যার উপসাগরীয় এই আরব দেশটি করোনার টিকা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে বিশ্বে। সবচেয়ে দ্রুতগতিতে দেশের প্রাপ্তবয়স্ক বেশিরভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া শেষ করেছে। তারপরও দেশটিতে করোনার প্রকোপ এখন উদ্বেগজনক।

প্রকোপ শুরু হয়েছে গত মাস থেকে। ওই সময় থেকে দেশটিতে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন। তবে সংক্রমণ বাড়লেও গত ফেব্রুয়ারিতে আমিরাত সংক্রমণের যে চূড়া দেখিছিল সেই সংখ্যাটা তার চেয়ে কম।

স্থানীয় সময় শনিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরও ১০ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দৈনিক মৃত্যুর হিসাবে যা গত মার্চের পর একদিনে সর্বোচ্চ। রয়টার্স তাদের নিজস্ব কোভিড-১৯ ট্র্যাকারের বরাত দিয়ে সোমবার এমন তথ্য জানিয়েছে।    

আমিরাতের ন্যাশনাল ইমরাজেন্সি ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনসিইএমএ) জানিয়েছে, করোনার বেটা, ডেল্টা ও আলফার মতো অতিসংক্রামক নতুন ধরনগুলোর কারণে দেশজুড়ে আবারও করোনার এই প্রকোপ দেখা দিয়েছে।     

এনসিইএমএ বলেছে, নতুন শনাক্তের ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ বেটা (প্রথম শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়), ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ ডেল্টা (প্রথম শনাক্ত হয় ভারতে) এবং ১১ দশমিক ৩ শতাংশ করোনা আলফা (প্রথম শনাক্ত হয় ব্রিটেনে) ধরনে আক্রান্ত।  

চলতি মাসেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে জানিয়েছে, গোটা বিশ্বে ডেল্টা তার আধিপত্য বিস্তার করছে। এই ধরনটিকে সংস্থাটি ইতোমধ্যে করোনার উদ্বেগজনক ধরন হিসেবে অভিহিত করেছে। এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যারা বিগত ১৪ দিনের মধ্যে ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছেন তাদের আমিরাত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। অবশ্য তারওপর কিছু নাগরিক ও কূটনীতিকরা এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছেন।

এনসিইএমএ দেশের মানুষকে যত দ্রুত সম্ভব টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন তাদের মধ্যে ৯৪ শতাংশ কোভিড টিকা নেননি। ফলে টিকা যত দ্রুত পারা যায় সবাইকে টিকা নেওয়া হবে।   

আমিরাতে বেশ কিছু টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মানুষকে সবচেয়ে বেশি দেওয়া হচ্ছে চীনা সিনোফার্মের তৈরি টিকা। এছাড়া ফাইজার-বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-৫ টিকাও দেওয়া হচ্ছে দেশটিতে।  

আমিরাতের ন্যাশনাল ইমরাজেন্সি ক্রাইসিস অ্যান্ড ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি জানিয়েছে, টিকা নেওয়ার যোগ্য দেশের এমন ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ইতোমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে; যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ। 

এএস