অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবোঝাই একটি নৌকায় গুলিবর্ষণ করেছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। নৌকাটিতে বহুসংখ্যক অভিবাসী ছিলেন। লিবিয়া থেকে অবৈধ পথে ইউরোপে যেতে এসব অভিবাসী বড় আকারের একটি নৌকার মাধ্যমে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছিলেন। লিবিয়ার কোস্টগার্ড ওই নৌকাটি লক্ষ্য করে দুইবার গুলিবর্ষণ করে।

জার্মানির এনজিও ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সি ওয়াচ ইন্টারন্যাশনাল’র সূত্র দিয়ে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। সংস্থাটি সমুদ্রে বিপদাপন্ন অভিবাসীদের উদ্ধারের কাজও করে থাকে। অভিবাসীবোঝাই নৌকা লক্ষ্য করে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের গুলিবর্ষণের একটি ভিডিওচিত্রও প্রকাশ করেছে জার্মান এই সংস্থাটি।

সি ওয়াচ ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকায় করে ইউরোপে আসছিলেন অভিবাসীরা। খুবই বিপজ্জনক এই যাত্রার সময় বহুসংখ্যক অভিবাসীবোঝাই ওই নৌকাটিকে ধাওয়া করে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। একপর্যায়ে নৌকাটিকে থামাতে গুলিবর্ষণ করে তারা। গত বুধবার (৩০ জুন) এই ঘটনা ঘটে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, ঠিক ওই একই সময়ে ভূমধ্যসাগরের ওপরে একটি বিমানে করে এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন জার্মান সংস্থা সি ওয়াচ ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তারা। এসময় ওপর থেকে অভিবাসীদের ওপর লিবিয়ার কোস্টগার্ডের গুলিবর্ষণের ভিডিওটি ধারণ করেন তারা।

পরে ভিডিওটি প্রকাশ করে পর্যবেক্ষক এই সংস্থাটি। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লিবিয়ার কোস্টগার্ডের স্পিড বোট অভিবাসীবাহী নৌকাটিকে ধাওয়া করছে। শুধু ধাওয়া করাই নয়, তারা অভিবাসীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণও করে।

সংস্থাটি বলছে, বিপজ্জনকভাবে অভিবাসীদের বহনকারী নৌকার খুব কাছ থেকে গুলি ছোঁড়া হয়। নৌকাটি এসময় আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ছিল। গুলিবর্ষণের মাধ্যমে লিবিয়ার কোস্টগার্ড নৌকাটিকে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল বলেও অভিযোগ করে জার্মান এই সংস্থাটি।

লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা লিবিয়ার কোস্ট গার্ডকে সমর্থনও করে। তারা চায়, ইউরোপের দিকে ধেয়ে আসা অভিবাসীদের স্রোত যেন বন্ধ করে লিবিয়ার ওই বাহিনী।

এক বিবৃতিতে সি ওয়াচ ইন্টারন্যাশনাল’র ফেলিক্স ওয়েইস জানিয়েছেন, ‘অভিবাসীদের দিকে গুলিবর্ষণকারী এবং তাদের বহনকারী নৌকাকে ডুবিয়ে দিতে চাওয়া ব্যক্তিরা মোটেও তাদেরকে রক্ষার জন্য সেখানে ছিল না। তাই অবিলম্বে লিবিয়ার তথাকথিত কোস্টগার্ডের সঙ্গে ইইউ’র সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে বন্ধ করতে হবে।’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরু থেকে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত লিবিয়ার কোস্টগার্ড ১৫ হাজার অভিবাসীকে উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ফিরিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে মানুষদের এভাবে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা বানচাল করা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক।

টিএম