রাশিয়ায় করোনার ডেল্টা ধরনের (প্রথম শনাক্ত হয় ভারতে) প্রকোপ শুরু হয়েছে। টানা পাঁচ দিন দেশটিতে করোনায় সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ৬৯৭ জন। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর যা এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ।

এএফপি জানাচ্ছে, গতদিন দেশটিতে নতুন করে ২৪ হাজার ৪৩৯ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত জানুয়ারির পর যা দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড। জানুয়ারির মাঝামাঝি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ উতরে কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল রাশিয়া।   

রাশিয়ায় সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজধানী মস্কো ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবার্গ। করোনার হটস্পট হয়ে উঠেছে দুই শহর। মস্কোকে গতদিন মারা গেছে ১১৬ জন। এতে গত সপ্তাহে মৃত্যুর যে রেকর্ড হয়েছিল তা ভেঙেছে।   

কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলছেন, রাশিয়ায় করোনায় অনেক মৃত্যুর হিসাব রাখা হচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর কারো মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে যখন কোভিড-১৯ এর বিষয়টি প্রমাণিত হচ্ছে শুধু তাদের মৃত্যুকেই হিসাবের মধ্যে ধরা হচ্ছে।

বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকে রাশিয়ার রাজধানী শহর মস্কো ও অন্যতম বৃহত্তম শহর সেন্ট পিটার্সবার্গে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফলে বাধ্য হয়ে নতুন করে করোনা বিধিনিষেধ আরোপ করছে কর্তৃপক্ষ। 

মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবানিন জানিয়েছেন, মস্কোতে প্রতিদিন যত মানুষের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে তার ৯০ শতাংশই করোনার অতিসংক্রামক ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত। করোনার এই নতুন ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ভারতে।

জুনের মাঝামাঝি থেকে রাশিয়ার করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু আবারও বাড়তে শুরু করে। সেই প্রকোপ দিন দিন আরও বেড়েই চলেছে। তবুও অনেকে টিকা নিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। অনেকে সন্দেহ পোষণ করছেন রুশ টিকা স্পুটনিক-৫ নিয়েও।  

বুধবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ানদের ভাইরাস ও টিকা সম্পর্কে গুজবে কান না দিয়ে ‘বিশেষজ্ঞদের কথা শোনার’ আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশব্যাপী টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার পদক্ষেপের প্রস্তাবের বিরোধী ছিলেন তিনি।

দেশেই তৈরি করোনার একটি টিকা গত বছর থেকে দেওয়া শুরু করলেও রাশিয়ার ১৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ টিকা নিয়েছেন। যারা ছয় মাস আগে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন বৃহস্পতিবার থেকে তাদের তৃতীয় ডোজ দিচ্ছে মস্কো।  

এএস