মধ্যপ্রাচ্যে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ ইরানে ভাইরাসটির অতিসংক্রামক ডেল্টা ধরনের প্রকোপ শুরু হয়েছে। ঊদ্ভূত এই পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ইরান মহামারির পঞ্চম ঢেউয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

টিভিতে প্রচারিত মন্তব্যে রুহানিকে বলতে শোনা যায়, ‌‘আশঙ্কা রয়েছে যে করোনা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থবিধিগুলো না মেনে চললে পুরো দেশ সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউয়ে প্রবেশ করতে পারে। রিপোর্ট আসছে, মাত্র ৬৯ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন।’ 

প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, ‘দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল দিয়ে দেশে ডেল্টা ধরনের প্রবেশ করেছে এবং দেশজুড়ে এ ধরনের বিস্তার ঠেকানোর ব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে আমাদের জন্য সমস্যা রয়েছে।’   

চীন থেকে দেশে দেশে যখন করোনা প্রাদুর্ভাব ছড়াতে শুরু করে তখন ইরান ছিল সবচেয়ে বিপর্যস্ত। মধ্যপ্রাচ্যের ৮ কোটি ৩০ লাখ মানুষের এই দেশটিতে করোনায় ৮৪ হাজার ৬২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে; যা ওই অঞ্চলে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। 

এক সপ্তাহ আগে ইরানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ রাজধানী তেহরান ও দেশটির ৯১টি শহরকে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করে। এসব শহরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বন্ধ রয়েছে জরুর নয় এমন ব্যবসা। তেহরানে ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস চলছে।  

বিশ্বের অন্যান্য দেশে টিকার যে সংকট তার চেয়ে ইরানের সংকটটা ভিন্ন। ইরানের ওপর অর্থনৈতিকসহ নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কারণে দেশটি টিকা কিনতে পারছে না। অবশ্য সম্প্রতি ইরান দেশে তৈরি করোনা টিকার অনুমোদন দিয়েছে।    

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে করোনার টিকা বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকে অল্প কিছু টিকা পেয়েছে ইরান। রুহানি বলেছেন কোভ্যাক্সের এক কোটি ৬৮ লাখ ডোজ টিকার কিছু ডোজ সম্প্রতি পেয়েছে ইরান। তবে ইরানের চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। 

ইরানের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের এক মুখপাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ টিকা দেশজুড়ে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ লাখ মানুষ করোনার সম্পূর্ণ ডোজ এবং ৪০ লাখ মানুষ টিকার মাত্র এক ডোজ পেয়েছেন। 

এএস