কঠোর লকডাউনে উত্তর কোরিয়ায় শুরু হওয়া চরম খাদ্যসংকটের মধ্যে আবার উত্তর কোরিয়াকে কোভিড টিকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। কিন্তু পিয়ংইয়ং বেশ কয়েকটি দেশ থেকে টিকা ও সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছে।

টিকা ও সাহায্যের প্রস্তাব ফিরিয়ে সীমান্ত বন্ধ করে ভাইরাসমুক্ত থাকার চেষ্টা করছে দেশটি। এতে করে চীনের সাথে বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কেননা খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানি তেলের জন্য মূলত বেইজিংয়ের ওপর পূর্ণ নির্ভরশীল উত্তর কোরিয়া।

রাশিয়া এর আগে ‘অনেকের অনাকাঙ্ক্ষিত এই কঠোর লকডাউন ও বিধিনিষেধ মেনে জীবনধারণের সাধ্য নেই’ জানিয়ে উত্তর কোরিয়ায় টিকা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। বুধবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভও বলেছেন, কয়েক দফায় টিকার প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো।

চীন সীমান্ত লাগোয়া দেশ উত্তর কোরিয়া শুরু থেকেই বলে আসছে তাদের দেশের কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই মহামারির দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এই কথাই বলা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। 

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন আনুষ্ঠানিকভাবে তার দেশে খাদ্যসংকটের কথা স্বীকার করেন। গত জুনের মাঝামাঝি ঊর্ধ্বতন নেতাদের এক বৈঠকে কিম বলেছেন, ‘জনগণের খাদ্য পরিস্থিতি এখন চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে।’

খাদ্যসংকটের কথা স্বীকার করে নিয়ে কিম জং উন দেশের মানুষকে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে মূলত তিনি গত নব্বইয়ের দশকে উত্তর কোরিয়ায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ভিক্ষের তুলনা করেছেন। 

পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় ধুঁকছে উত্তর কোরিয়া। গত বছর টাইফুন ও এর প্রভাবে বন্যার কারণে কৃষি খাত শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। দেশটিতে এখন এক কেজি কলার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৫ ডলারে।

উত্তর কোরিয়া এখন সংকটে পড়েছে। তবে এ সংকট কতটা মারাত্মক তা বোঝা যাবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে। বুধবার জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে ৮ লাখ ৬০ হাজার টন খাদ্য সংকটে পড়েছে উত্তর কোরিয়া। এটা আরও প্রকট হবে।

এএস